দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : দেশের ১৬০ জনেরও বেশি প্রথম সারির শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী তীব্রভাবে সোচ্চার হয়েছেন সুপরিচিত মানবাধিকার কর্মী ও লেখক হর্ষ মন্দারের সর্মথনে। ফেব্রুয়ারির উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসার ঘটনায় মন্দারকে ফাঁসানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ। মন্দারের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের অবস্থানকে তাঁরা সমালোচনায় বিদ্ধ করে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের সমবেত অভিযোগ ‛ক্রনোলজি’ সাজাতে ও মিথ্যা ব্যাখ্যা নির্মাণ করতে মন্দারের নাম রাখা হয়েছে চার্জশিটে। মন্দারের সমর্থনে তাঁরা স্যোশাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেনও করেছেন।
দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল ওই পরিকল্পিত দাঙ্গায় তদন্তে নেমে প্রায় সাতটি চার্জশিট পেশ করেছে। এই চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হয়েছেন এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত বা অন্যান্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি ও তাদের উপসানালয় ধ্বংস হয়েছে এই সাম্প্রদায়িক তাণ্ডবে। চাঁদবাগে হিংসার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি চার্জশিটে পুলিশ হর্ষ মন্দারের নাম উল্লেখ করেছে, যিনি সিএএ বিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে সমাজকর্মীরা হর্ষ মন্দারকে নিশানা করার জন্য দিল্লি পুলিশের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “ক্রনোলজি সাজাতে ও মিথ্যা ব্যাখ্যা তৈরি করতে যেভাবে দিল্লি পুলিশ হর্ষ মন্দার ও অন্যান্য সমাজকর্মীদের নাম উল্লেখ করেছে চার্জশিটে তার আমরা তীব্র নিন্দা করছি।” এই সমাজকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অভিজিৎ সেন, অধ্যাপক অচিন বিনায়ক, ইতিহাসবিদ আদিত্য মুখার্জি, অ্যাডমিরাল এল রামদাস, অ্যাডমিরাল বিষ্ণু ভাগবত, অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল অজয় কুমার সিং, চিত্রপরিচালক অর্পণা সেন, ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব সহ আরও অনেকে।
মন্দার ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময় চাকুরিতে ইস্তফা দেন। সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে গেছেন। অনুন্নত শ্রেণি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উন্নতিকল্পে তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমান বিরাদারি ও কারবাঁ-এ মুহাব্বত এর প্রতিষ্ঠাতা তিনি। করোনা লকডাউনে হেঁটে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তায় তিনি সক্রিয় হয়েছেন। দিল্লি হিংসার প্রেক্ষিতে, উস্কানিমূলক মন্তব্য দেওয়ার জন্য তিনি বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ও এমপি পরবেশ বার্মার বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে মামলা দায়েরে করেছিলেন। দক্ষিণপন্থী উগ্ৰ জাতীয়তাবাদীদের চক্ষুশূল তিনি বরাবরই। এরই ফলস্বরূপ দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে তাঁর নাম বলে বিশেষজ্ঞমহলের ধারণা।