দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : অবশেষে ৪৫ দিন পর মুক্তি পেতে চলেছেন আরামবাগ টিভি ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী আলিমা বিবি এবং ক্যামেরাম্যান সুরজ আলি খান।
মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। চারটি মামলায় আগেই জামিন মিলেছিল। বাকি একটি মামলাতেও জামিন মিলল আজ। এদিন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সফিকুলের জামিনের শুনানি ছিল।
সাংবাদিকের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবি সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। আদালত এদিন তিন জনেরই জামিন মঞ্জুর করেছে। সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‛এই সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই পুলিশ লেলিয়ে কেস দেওয়া হচ্ছে। আগে এটা শুধু রাজনৈতিক ও সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে হচ্ছিল। এখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও হচ্ছে। এটা একটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা। আদালত একাধিক মন্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছে এই সরকার বাক স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করছে।’
এপ্রিল মাসে আরামবাগ টিভি ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, লকডাউনের মধ্যেও থানা থেকে ক্লাবগুলিকে চেক বিলি করা হচ্ছে। প্রথমে পুলিশ অস্বীকার করলেও পরে কাগজে কলমে মেনে নেয় চেক বিলি হয়েছিল। সফিকুলের অভিযোগ ছিল, পুকুর চুরি হওয়া মানুষের সামনে তুলে ধরার কারণেই এই পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে তাঁকে জেলে পাঠাতে। সেই সময়ে অনেকে বলেছিলেন, যে ক্লাবগুলিকে পুলিশ সরকারি চেক বিলি করেছিল তার অধিকাংশের কোনও অস্তিত্বই নেই। সবটাই শাসকদলের নেতাদের লুটে খাওয়ার বন্দোবস্ত।
সেই মামলায় জামিন পেয়ে যান সফিকুল। কিন্তু জুন মাসে তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়। সেই মামলায় সস্ত্রীক সফিকুল ও ক্যামেরাম্যান সুরজ আলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৯ জুন একটি এফআইআর দায়ের হয় সফিকুল ও সুরজের বিরুদ্ধে। তাতে বলা হয়, গাছ কাটা নিয়ে এক ব্যক্তিকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী পুলিশকে বলেন, সুরজ তাঁকে হুমকি দেন, ৩০ হাজার টাকা না দিলে গাছ কাটার খবর ফাঁস করে দেবেন! তাঁর বক্তব্য, তিনি সুরজকে বলেছিলেন পঞ্চায়েতের নির্দেশে গাছ কাটছেন। তাও টাকা চাওয়া হয়।
অনেকের অভিযোগ, সুরজের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই মামলা সাজিয়েছিল পুলিশ। তাঁদের এও বক্তব্য, বিভিন্ন খবরের জেরে প্রশাসনের উপর মহলে নাড়াচাড়া পড়ে গিয়েছিল। সেই জন্যই সফিকুলদের জেলে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।