দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন এক ‘সন্তান’ নীতি চালু ছিল চিনে। একজন মা একটি মাত্র সন্তানের জন্ম দিতে পারতেন। কিন্তু এবার সেই আইনের পরিবর্তন আনতে চলেছে চিন সরকার। নতুন আইনে তিনটি পর্যন্ত সন্তান নিয়ে পারবেন একজন মা। এক সন্তানের ফলে বৃদ্ধ-বৃদ্ধায় ভরে যাচ্ছে দেশ। অদূর ভবিষ্যতে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে চিনের অর্থনীতিতে। এই কথা মাথায় রেখে এবার নয়া সন্তান নীতি আনছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। নয়া নীতি অনুযায়ী, চিনা দম্পতিরা সর্বাধিক তিন সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন। সরকার দ্রুত এই সংক্রান্ত আইন আনবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই ‘সন্তান’ নীতি পরিবর্তনের কথা ভাবনাচিন্তা করছিল চিনের কমিউনিস্ট পার্টি। অবশেষে সোমবার চিনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো বৈঠকের পর ‘অচলায়তন’ ভাঙার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও। এদিনের বৈঠকে দেশে বাড়তে থাকা বার্ধক্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি এই সমস্যা মোকাবিলায় আরও একাধিক নীতি বদলেরও ইঙ্গিত মিলেছে।
এদিন চিনের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “দেশের সন্তাননীতি পরিবর্তন করা হবে। দম্পতিরা তিন সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। এ সংক্রান্ত আইন আনা হচ্ছে। সঙ্গে আরও কিছু আইনের পরিবর্তন করা হবে। এই নীতিগুলি দেশের জনবিন্যাসের উন্নতি করবে।” শুধু জন্মনীতি নয় অবসরের বয়স আরও বাড়িয়ে দেওয়া, শিক্ষার মাধ্যমে বিবাহ এবং পরিবার সংক্রান্ত গুরুত্ব প্রচার করা, শিশুদের দেখভাল, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
১৯৭৯ সালে চিনে বিতর্কিত এক সন্তান নীতি চালু করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল জন্মহার কমানো এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো। দীর্ঘদিন ধরে কার্যত জোর করে এই নীতি মানতে বাধ্য করা হত। জোর করে গর্ভপাত-সহ একাধিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হত। অবশেষে ২০১৬ সালে এক সন্তান নীতি বাতিল করা হয়। বদলে দুই সন্তানের জন্মে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেই নীতিও পরিবর্তনের জন্য চাপ তৈরি হচ্ছিল। বিশেষ করে যেভাবে চিনের জনসংখ্যায় তরুণদের তুলনায় প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে তা নিয়ে বাড়ছিল চিন্তা। তাই এবার দুই নয়, তিন সন্তানের জন্মের বিষয়ে ছাড়পত্র দিল সে দেশের শাসকদল।