নিজস্ব সংবাদদাতা, দৈনিক সমাচার, কলকাতা : লোকসভা ও রাজ্যসভায় চরম বিরোধিতা সত্ত্বেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করা হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্থানের অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই আইনের বিরোধিতা করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে।
আমাদের সব খবর পড়ুন এইবার মোবাইল অ্যাপে। ডাউনলোড করুন বাংলার সেরা নিউজ অ্যাপ
সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করা হয় যে, এই আইন ভারতীয় সংবিধানের ৫, ১০, ১৪ এবং ১৫ নম্বর ধারাতে উল্লেখিত সমস্ত ভারতবাসীর নাগরিকত্ব ও সমানাধিকারের বিরুদ্ধাচরণ করে। এই আইন একাধিক ভাবে ত্রুটিযুক্ত বলে মনে করে সংগঠনগুলি। তাঁদের প্রশ্ন ‛বিদেশি গুপ্তচর সংস্থাগুলি এই আইনের সুবিধা নিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে তার দায়ভার কে গ্রহণ করবেন? ভারতের প্রতিবেশী বাকি দেশগুলোকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র তিনটি দেশ কেন? কিভাবে শরণার্থীরা প্রমাণ করবে তারা ওই তিনটি দেশ থেকেই আগত? ওই তিনটি থেকে আগত শরণার্থী যারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তাদের আবার শরণার্থী করে দেওয়ার পরিকল্পনা নয়তো?’
সংবাদমাধ্যমে ২৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে। কমপক্ষে ১০০০ জন আহত হয়েছে এবং ৫০০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশি আক্রমণ খুবই নিন্দনীয় বলেও এই সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করা হয়।
সব খবর পড়তে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন – এখানে ক্লিক করুন
এই সাংবাদিক বৈঠকে আরও দাবি করা হয় যে, কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মের ভিত্তিতে যে বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করাতে চলেছে তা ভারতবর্ষের সংবিধানের পরিপন্থী। এই জাতিবিদ্বেষমূলক আইন দেশের সাধারণ মানুষকে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন করবে। অবিলম্বে এই বিল প্রত্যাহার করতে হবে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনবিরোধী নীতিকে আড়াল করতে দেশের মধ্যে তারা এক ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে এবং মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দেশকে শাসন করার পরিকল্পনা করেছে। সাধারণ জনগণ ও ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশ যেভাবে গুলি চালাচ্ছে ও আক্রমণ করছে তার বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। সরকার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে ভয় পেয়েছে তাই আক্রমণ চালাচ্ছে। সরকার অবিলম্বে এই আইন বাতিল না করলে ছাত্র আন্দোলন চলতে থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।