Wednesday, March 12, 2025
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

গুজরাতে রামমন্দিরের চাঁদা সংগ্রহে গিয়ে মুসলিমদের বাড়িতে ইটবৃষ্টি, অগ্নিসংযোগ ভিএইচপির, খুন এক, গ্রেফতার ৪০

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের পর এবার গুজরাত। রাম মন্দিরের চাঁদা সংগ্রহে গিয়ে তাণ্ডব উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি)। রবিবার বিকেলে গুজরাতের কচ্ছের কিদানা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের নির্মাণের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করতে রথযাত্রা বার করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। সেখানে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জায়গা দিয়ে ওই রথযাত্রা পেরনোর সময়ই ঝামেলা বাধে বলে জানা গিয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তলোয়ার, লাঠিসোটা নিয়ে রথযাত্রায় পা মিলিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু এলাকায় মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জোরে জোরে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা। নামাজের কারণে মুসলিমরা তাদেরকে আসতে শ্লোগান দিতে বললে তারা এলোপাথাড়ি তরোয়াল, লাঠি এমনকি ইটবৃষ্টি শুরু করে। তাতেই এলাকাবাসীর সঙ্গে সঙ্ঘর্ষ বেধে যায় বলে অভিযোগ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে পুলিশকর্মী-সহ আহত অনেকে। সঙ্ঘর্ষস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ১ জনের দেহ। বেশ কিছু গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান হাঙ্গামাকারীরা। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ এবং ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের হয়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কচ্ছ (ইস্ট) পুলিশের একটি বাহিনী। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড় হটানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মারামারি ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে থেকে বেশ কিছু পুলিশকর্মীও জখম হন। রাতের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কচ্ছ (ইস্ট) পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট ময়ূর পাটিল জানিয়েছেন, ওই এলাকা দিয়ে রথযাত্রা নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেয়নি ভিএইচপি।

তবে গুজরাতই নয়, রামমন্দির নির্মাণের জন্য চাঁদা তোলা ঘিরে মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী, ইন্দওর এবং মন্দসৌর-সহ দেশের আরও অনেক জায়গা থেকে ঝামেলার খবর পাওয়া গিয়েছে। রামমন্দিরের জন্য পাঠানো ১ লক্ষ ১১ টাকার চেক ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা চিঠিতে সম্প্রতি সে কথা উল্লেখ করেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি লেখেন, ‘হাতে লাঠি-তরোয়াল নিয়ে, স্লোগান দিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে উত্তেজিত করা কখনও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের অংশ হতে পারে না। হিন্দু ধর্মে এই ধরনের ঘটনার কোনও স্থান নেই। এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যে মন্দির নির্মাণ বিরোধী নন, সে কথা ভাল ভাবেই জানেন আপনি। তাই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চাঁদা তুলতে বেরনো বন্ধ করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিতে হবে আপনাকে’।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!