দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক:
পরিষ্কার জল, শৌচালয়ের মতো নূন্যতম চাহিদাও পূরণ করা হচ্ছে যৌনতা ও অত্যাচারের বিনিময়ে। বৃহস্পতিবার লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের রিপোর্টে বলা হয়, লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পগুলি ক্রমাগত নূন্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। গার্ডদের হাতে ভয়াবহ যৌন হিংসার শিকার মহিলারা।
রিপোর্টে ভূমধ্যসাগরে বাধাপ্রাপ্ত অভিবাসীদের বর্তমান পরিস্থিতির নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। সম্প্রতি লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে আসে এই শরণার্থী শিবিরগুলি। কিন্তু তা সত্ত্বেও শিবিরগুলির অবস্থার অবনতি ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
মূলত শিবিরগুলি রক্ষীরাই ক্রমাগত অত্যাচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। রিপোর্টে বলা হয়, ‘কেউ পানীয় জল এবং বিছানা চাইলে ধর্ষণের বিনিময়ে তা দেওয়া হবে বলে জানানো হচ্ছে মহিলাদের।’ অ্যামনেস্টির প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন শিবিরের মহিলা শরণার্থীরা।
অ্যামনেস্টি নাইজেরিয়া, সোমালিয়া এবং সিরিয়ার মতো দেশ থেকে আগত ১৪ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্রায় ৫৩ জন মহিলা শরণার্থীর সাক্ষাত্কার নেয়। এঁদের বেশিরভাগই শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে এসেছেন বা টেলিফোনে গোপনে জানিয়েছেন।
তাঁদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের বর্ণনায় আঁতকে উঠেছেন অ্যামনেস্টির প্রতিনিধিরা। ‘অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও বারবার ধর্ষণ করে রক্ষীরা,’ উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এদিকে পুরুষদের উপরেও কম অত্যাচার হয় না। পুরুষদের শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে থাকতে বাধ্য করা হয়। সেই সঙ্গে ছোট ছেলেমেয়েদেরও যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে জানিয়েছেন শরণার্থী মহিলারা।
লিবিয়ার উপকূলরক্ষীদের অর্থের জোগান দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০১১ সালে মহম্মদ গদ্দাফির পতনের পরে ইউএন-এর শান্তির পরিকল্পনা কতটা প্রকৃত শান্তি আনতে পেরেছে, তাই নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। বিশেষত, এই শরণার্থী শিবিরগুলি এখনও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিরই হাতে। সেখানে তাদেরই দাপট বেশি।
হয় তো এই কারণেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারা লিবিয়ান কোস্ট গার্ডদের অর্থের জোগানের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, লিবিয়া অভিবাসীদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়।