দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ঋণের দায়ে প্রতিবছর হাজার হাজার কৃষক আত্মহত্যা করছেন। এদিকে ২০ লক্ষ নকল কৃষকের হাতে ১,৩৬৪ কোটি টাকা দিয়েছে মোদী সরকার। এক আরটিআই মারফত জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার ১,৩৬৪ কোটি টাকা গিয়েছে ২০ লাখ অযোগ্য এবং নকল চাষিদের হাতে। এই আরটিআই-এর জবাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রালয়। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি চালু করে। এই প্রকল্পে ছোট ও প্রান্তিক চাষীদের তিন কিস্তিতে বছরে ৬হাজার টাকা দেওয়া হয়।
আরটিআইটি করেছেন মানবধিকার কর্মী ভেঙ্কটেশ নায়েক। সেখান কেন্দ্রের জবাবে জানা গিয়েছে এই টাকা গিয়েছে অযোগ্য চাষী ও আয়কর দাতা চাষীদের কাছে। মোট ১,৩৬৪ কোটি টাকার ৫৫.৫৮ শতাংশ গিয়েছে আয়কর দাতা কৃষকদের কাছে। বাকি ৪৪.৪১ শতাংশ টাকা দিয়েছে অযোগ্য চাষীদের কাছে। এমনটাই জানিয়েছেন ভেঙ্কটেশ নায়েক। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন সাংবাদমাধ্যমের থেকে জানতে পেরেছেন সেই টাকা পুনুরুদ্ধারের কাজ নাকি কেন্দ্র শুরু করেছে। তাঁর দাবি, ২০২০ সালে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই টাকা গিয়েছে আয়কদাতা কৃষক ও অযোগ্য চাষীদের কাছে। অর্থাৎ সরকারি তথ্যই বলছে টাকা গিয়েছে ভুল হাতে। এই সুবিধাভোগীরা মূলত ৫টি রাজ্যের। পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, অসম, গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশের। নায়েক বলেছেন, সুবিধাভোগীদের তালিকায় প্রথমে পঞ্জাব। মোট টাকার ২৩ শতাংশ গিয়েছে পঞ্জাবের ৪.৭৪ লাখ সুবিধাভোগীদের কাছে। দ্বিতীয়তে অসম। ৩.৪৫ লাখ লোকের হাতে গিয়েছে ১৬.৮৭ শতাংশ টাকা। মহারাষ্ট্রের ২.৮৬ লোকের হাতে গিয়েছে ১৩.৯৯ শতাংশ টাকা। অর্থাৎ এই ৩টি রাজ্যেই মোট টাকার অধিকাংশই অযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে গিয়েছে। তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশ। গুজরাতের ১.৬৪ লাখ সুবিধাভোগীর কাছে গিয়েছে ৮.০৫ শতাংশ টাকা। উত্তরপ্রদেশের ১.৬৪ লাখ সুবিধাভোগীর কাছে গিয়েছে ৮.০১ শতাংশ টাকা। তালিকায় নাম রয়েছে সিকিমেরও।
মোট ১,৩৬৪ কোটি টাকা ৬৮.২০ লাখ টাকা করে প্রত্যেক কিস্তিতে দেওয়া হয়েছিল। এই স্কিমে প্রতি কিস্তিতে প্রাপক ২০০০ টাকা করে পান। মোট ৬৮ .২০ লাখ টাকার মধ্যে ৪৯.২৫ লাখ টাকা আয়কর দাতা কৃষক ও বাকি ১৮.৯৫ লাখ টাকা অযোগ্য কৃষকদের হাতে দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে কেন্দ্রের এই প্রকল্পটি চালু হয়। এখানে উচ্চ আয় সম্পন্ন কৃষকদের এই প্রকল্পে রাখা হয়নি। সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, মেয়র, পঞ্চায়েত, সরকার অফিসার, ১০ হাজার টাকার পেনশনভোগী, আয়করদাতা, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, চার্টাড অ্যাকাউন্টেট-মতো শ্রেণীদের এই প্রকল্পে রাখা হয়নি।