দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় গত একমাসে ৫ বিজেপি নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাশ্মীর উপত্যকায় এখন বিজেপি ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। এরইমধ্যে ৪০ জন ব্যক্তি যারা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তাঁরা ইস্তফা দিয়ে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করেছেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, কাশ্মীর উপত্যকায় গত একমাসে বিজেপি’র ৬ জনের বেশি নেতা-কর্মীর উপরে হামলা হয়েছে। এরমধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনও একজন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। গত ৮ জুলাই উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরায় বিজেপি’র যুব নেতা ওয়াসিম বারী, তাঁর বাবা ও ভাইকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা।
ওই ঘটনার পর দক্ষিণ কাশ্মীরে ৩ হামলার ঘটনায় বিজেপি’র ২ সরপঞ্চ নিহত ও একজন আহত হন। গত রবিবারও কাশ্মীরের বাডগাম জেলায় এক সরপঞ্চকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এসব ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে বিজেপি’র সঙ্গে যুক্ত এ পর্যন্ত ৪০ জন নেতা-কর্মী ইস্তফা দিয়ে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করেছেন।
দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলার বাসিন্দা ও সরপঞ্চ মুহাম্মাদ ইকবাল বলেন, তিনি মরতে চান না। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। যদি আমার কিছু হয়ে যায় তাহলে আমার সন্তানদের কে দেখবে? ইকবাল বলেন, আমি রাজনীতিতে এক পয়সাও উপার্জন করিনি। আমি নিজের কাজের জন্য সময় ব্যয় করতে চাই।’
কাশ্মীর উপত্যকায় ১২৬৭ পঞ্চ-সরপঞ্চ, ৬৮ ব্লক ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (বিডিসি) রয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই বিজেপি’র। এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এসকল লোকেদের জেলা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিছু ব্যক্তিকে বিধায়ক হোস্টেল এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কলোনিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিজেপি’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরপঞ্চ মুহাম্মাদ আমীন বলেন, ‘আমাকে জোর করে এমন জায়গায় রাখা হয়েছে যেখানে খাওয়া বা ঘুমোনোর ব্যবস্থা নেই। আমার মেয়ের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল, সে হাসপাতালে রয়েছে। সরকার এখানে জোর করে আটকে রেখে কী দেখাতে চাচ্ছে?’
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি মহাসচিব অশোক কৌল পহেলগামের এক হোটেলে অবস্থানরত পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, এদেরকে উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কিছুদিনের জন্য এখানে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এদেরকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে।
কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে। এতে পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্স, কংগ্রেস অংশগ্রহণ করেনি। কারণ, কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সুবিধা সম্বলিত ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেওয়ার পরে সেখানকার মূলধারার রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।