দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ঈদ আসলেই বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা হতে হয় মুসলিম পড়ুয়াদের। কখনও কলেজে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস চলে। কখনো আবার ছুটি দেওয়া হয় না। কখনো বা পরীক্ষা দিন করা হয়। অনেক সময় চাকরির পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয় ঈদের দিন বা তার আগের দিন। এরকম নজির অনেক রয়েছে। এবারও তার বিকল্প কিছু নয়। এবার ঈদের দিনে পড়ুয়াদের পরীক্ষার ফর্ম জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল সরকার পোষিত কলকাতার এক কলেজ। স্নাতক স্তরের পরীক্ষার ফর্ম জমা দেওয়ার কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, উত্তর কলকাতার উল্টোডাঙা এলাকার ৩৩/৬/১ বিপ্লবী বারিন ঘোষ সরণি, কলকাতা-৭০০০৬৭ ঠিকানায় অবস্থিত স্যার গুরুদাস মহাবিদ্যালয় এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে গত ৭ জুলাই। ইউজিসি স্বীকৃত ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মান নির্ধারক সংস্থা ‘ন্যাক’-এ বি ক্যাটেগরিভুক্ত রাজ্য সরকার পোষিত স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয় ওই কলেজে বিএ, বিএসসি, বিকম-এর পাশ কোর্স অনার্সের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য কলেজের প্রিন্সিপালের স্বাক্ষরিত ৭ জুলাই যে পরীক্ষার নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে, তাতে ফর্ম জমা দেওয়া দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ জুলাই, ২০২১।
স্যার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই দিনে রাখা হয়েছে বিএ পাস কোর্সের বাংলা বিষয়ের দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা ফর্ম জমা দেওয়া। ছাত্র ও ছাত্রী উভয় পড়ুয়াদেরকে এই দিনে অনলাইনে ফর্ম ফিলআপ করে তা কলেজের অফিসে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ফলে, এই নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম, ঈদের দিনে ছুটি থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় পড়তে আসা পড়ুয়ারা সাধারণ বাড়ি চলে যান। বিশেষ করে মুসলিম ছেলেমেয়েরা তাদের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুজ্জোহা বা বকরিদ পালন করা অবস্থায় কী করে কলেজে এসে ফর্ম জমা দেবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে। যদিও রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর ২০২১ সালের যে বার্ষিক ছুটি তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ রয়েছে ২১ জুলাই, ২০২১ ঈদুজ্জোহা (বকরিদ) দিনে ছুটির কথা।
২১ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার এনআই অ্যাক্টেও ছুটি ঘোষণা করেছে। তাই রাজ্য সরকারের ছুটির নোটিশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকার পোষিত একটি কলেজের বিরুদ্ধে। ঈদের দিন ফর্ম জমা নেওয়ার নোটিশের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ছাত্র মহল থেকে প্রতিবাদ উঠছে। পরীক্ষার ফর্ম জমা নেওয়ার তারিখ অবিলম্বে পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে। যদিও রাজ্য সরকারের ছুটির নোটিশ অমান্য করার ব্যাপারে ওই কলেজের অধ্যক্ষের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মেলেনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্যও।