নয়াদিল্লি, ০১ সেপ্টেম্বর : গত আর্থিক বছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে দেশ জোড়া লকডাউনের ধাক্কায় কার্যত থমকে গিয়েছিল দেশের অর্থনীতি, যা সঙ্কুচিত হয়েছিল ২৪ শতাংশেরও বেশি। সেই তুলনায় এ বছর এপ্রিল-জুনে বৃদ্ধির হার (২০.১%)। কেন্দ্রের চোখে তা ‘তাক লাগানো’ বা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর রুপোলি রেখা। কিন্তু এ সব সত্ত্বেও এখনও কোভিডের আগের বছরের (২০১৯-২০) স্তরে ফিরতে পারল না দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি।
মঙ্গলবার বৃদ্ধির পরিসংখ্যান সামনে আসতেই তাকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের সাফল্য বলে তুলে ধরে প্রচারে নেমে পড়ল কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপি। ঘোষণা, ‘ইন্ডিয়া বাউন্সেস ব্যাক’! অর্থাৎ, ভারত ঘুরে দাঁড়াল। এ দিন পরিসংখ্যান মন্ত্রকের ঘোষণা, এপ্রিল-জুনে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ২০.১%। কোনও ত্রৈমাসিকে এত খানি বৃদ্ধি এই প্রথম। তাই এই হার সর্বকালীন রেকর্ডও।
বৃদ্ধির হার যে ২০ শতাংশের আশেপাশে থাকবে, সেই পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং একাধিক মূল্যায়ন সংস্থা। এদিকে অর্থনীতিবিদেরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এতে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, গত অর্থবর্ষে এপ্রিল-জুনে লকডাউনের ধাক্কায় জিডিপি-র ২৪.৪% সঙ্কোচন হয়েছিল। তার তুলনায় এ বছরের এপ্রিল-জুনে জিডিপি ২০.১% বেড়েছে। কিন্তু এখনও কোভিডের আগের বছরের (২০১৯-২০ সালের এপ্রিল-জুন) স্তরে তা পৌঁছতে পারেনি। অথচ সেই বছরেও কিন্তু অর্থনীতিতে বৃদ্ধির গতি শ্লথই ছিল।
সরকারি পরিসংখ্যানও বলছে, কোভিডের আগের বছরে এপ্রিল-জুনে জিডিপি ছিল ৩৫.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। লকডাউনের ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে তা ২৬.৯৫ লক্ষ কোটিতে নেমে যায়। এ বছরের এপ্রিল-জুনে তা বেড়ে ৩২.৩৮ লক্ষ কোটি টাকা হলেও, এখনও কোভিডের আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা কম। সহজ ভাষায়, কোভিডের আগে জিডিপি ১০০ টাকা থেকে থাকলে, লকডাউনের সময়ে তা কমে ৭৫.৬ টাকা হয়েছিল। এ বার তা ফের বেড়ে ৯০.৭ টাকা হল। কিন্তু এখনও ১০০ টাকায় পৌঁছতে পারল না।