দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপিকে ঠেকাতে যত বিরোধী শক্তিই একজোট হওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনও জোট বা ফ্রন্ট সম্ভব নয়। ‘মিশন ২০২৪’ উপলক্ষে ঠিক যে সময় অ-কংগ্রেসী জোটের সুতো পাকানো শুরু হয়েছে, তখনই এই বিরাট মন্তব্য করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বেশিরভাগ বিজেপি বিরোধী দলের সঙ্গে নিজের বাসভবন এক হেভিওয়েট বৈঠকের পরই এই বক্তব্য পেশ করেছেন তিনি। যা কিছুটা হলেও গত ২১ জুন করা প্রশান্ত কিশোর মন্তব্যের প্রতিফলন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শুক্রবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যদিও তিনি দাবি করেছেন, “সে দিনের বৈঠকে জোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে যদি কোনও বিকল্প শক্তি তৈরি হয়, তা একমাত্র কংগ্রেসকে নিয়েই হবে। আমাদের সেরকম (কংগ্রেসের মতো) ক্ষমতা দরকার এবং আমি বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপন করেছি।” জোটের মুখ কে হবেন? শরদ পাওয়ার নিজে, নাকি অন্য কেউ? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর উক্তি, “আমি আগেও অনেকবার চেষ্টা করে দেখেছি।” একক নেতৃত্বের বদলে তিনি এ দিন ‘সংঘবদ্ধ নেতৃত্বের’ পক্ষেই সওয়াল করেন।
বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় বিষয়, চলতি সপ্তাহেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকেও খানিকটা একই সুরে বলতে শোনা গিয়েছিল, “বিজেপিকে ঠেকানো কোনও তৃতীয় বা চতুর্থ ফ্রন্টের কাজ নয়।” অর্থাৎ তিনিও কোথাও গিয়ে একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন যে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী কোনও জোট বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিতে সক্ষম হবে না। কংগ্রেসের কোথায় খামতি রয়েছে, তা দলকে খুঁজে বের করে শোধরাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর এই কথা বলার ঠিক চারদিনের মাথায় অ-কংগ্রেসী কোনও ফ্রন্টের জল্পনা কার্যত নস্যাৎ করে দিলেন শরদ পাওয়ার।
ফলে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা বাড়ল, তবে কি ফের একবার কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই মহাজোট বা ইউপিএ-কে নতুন করে গড়ার কাজ শুরু হবে। যদি তেমনটা হয়, সেক্ষেত্রে ইউপিএ চেয়ারপার্সন কে হবেন, এই প্রশ্নটাও উঠে আসছে। এই চেয়ারে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসার সম্ভবনা উজ্জ্ব বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহলের একটি বড় অংশ। বিশেষ করে বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পর তিনি যেভাবে বিজেপি বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছেন, তাতে মমতাই এখন বিরোধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার ‘অটোমেটিক চয়েস’। কিন্তু এ দিন সংঘবদ্ধ নেতৃত্বের কথা বলে সেই সম্ভাবনাও কিছুটা অস্তাচলে ঠেলে দিয়েছেন পাওয়ার।