দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র পাঁচ মাস আগেই মুকেশ আম্বানিকে হটিয়ে এশিয়ার শীর্ষ ধনী হয়েছিলেন আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানি। জেফ বেজোসকে পেছনে ফেলে উঠে গিয়েছিলেন ফোর্বসের বিশ্বসেরা ধনীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের ঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে আদানি গ্রুপের। ধনীদের তালিকায় ১৬তম স্থানে নেমে গেছেন গৌতম আদানি। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্মের এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর মাত্র ৮ দিনে গৌতম আদানি হারিয়েছেন ১০ হাজার কোটি ডলার বা ১০ লাখ কোটি টাকার সম্পদ। বিশ্লেষকরা বলছেন, আদানি গ্রুপের এই ঝড় কবে থামবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’-এর মালিক নাথান অ্যান্ডারসন। ম্যানহাটনের একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে বাস করা নাথান এর আগেও বেশ কয়েকটি সংস্থাকে বিপদের মুখে ফেলেছেন। তাঁর রিপোর্ট সর্বস্বান্ত করেছে একাধিক সংস্থাকে। নাথান ‘ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট’ থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসা (ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস) নিয়ে স্নাতক হন। এর পর তিনি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ফ্যাক্টসেট রিসার্চ সিস্টেমস ইনকর্পোরেটেড’-এর আর্থিক দফতরে (ফিনান্স) তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সেখানে তিনি নিজের সংস্থার সঙ্গে অন্য বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলির মেলবন্ধন ঘটানোর কাজ করতেন। ইজরায়েলে বেশ কিছু দিন অ্যাম্বুল্যান্স চালকের কাজও করেছেন নাথান।
২০১৭ সালে ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’-এর প্রতিষ্ঠা করেন নাথান। এটি একটি ফরেনসিক আর্থিক গবেষণা সংস্থা। যা বিভিন্ন সংস্থার ‘ইক্যুইটি’, ‘ক্রেডিট’ এবং ‘ডেরিভেটিভস’ বিশ্লেষণ করে। ১৯৩৭ সালের ৬ মে নিউ জার্সিতে উড়ে যাওয়ার পথে মাঝ আকাশেই আগুন লেগে যায় জার্মানির বিমান ‘হিন্ডেনবার্গ এয়ারশিপ’-এ। মাটিতে আছড়ে পড়ে মৃত্যু হয় ৩৬ জন বিমানযাত্রী এবং বিমানকর্মীরা। সেই বিমানের নামেই সংস্থার নামকরণ করেন নাথান। কোনও সংস্থার সম্ভাব্য আর্থিক কেলেঙ্কারিগুলি খুঁজে বার করার পর তা নিয়ে ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। আদানির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে হইচই পড়ে যায়। ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে হিন্ডেনবার্গ এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৬টি সংস্থার আর্থিক কারচুপির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যার নবতম সংযোজন আদানি গোষ্ঠী।