দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : করোনা-জুজুতে সবাই আতঙ্কিত। তারমধ্যেও কিছু মানুষ করোনার বিরুদ্ধে ‘লড়াই’ জারি রেখেছেন। সন্দেহভাজনদের পরিচর্যা থেকে সচেতনতা প্রচার — সবেতেই সামনে এগিয়ে আসছেন তাঁরা। তাঁদেরই মধ্যে রয়েছেন ‘ভাবি’ অর্থাৎ আশাকর্মী আবিদা খাতুন। গ্রামগঞ্জে হোম কোয়রান্টিনে থাকা লোকজনের গতিবিধি সত্যিই বাড়ির ভিতরে সীমাবদ্ধ কি না, তা দেখার দায়িত্ব আশাকর্মীদের। এক অর্থে তাঁরাই গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের চোখ। সেই দায়িত্বই বাড়তি উদ্যমে পালন করছেন আবিদা।
আরামবাগের হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের শাহবাগ এবং তারাল এলাকায় আমানউল্লা, জাকিরদের মতো ভিন্ রাজ্য থেকে সম্প্রতি ঘরে ফেরা সকলেই ‘ভাবি’র ভয়ে তটস্থ। ঘর থেকে বেরোলেই ‘ভাবি’র শাসন! কথা না শুনলে পুলিশ ডাকছেন। পঞ্চায়েত প্রধান, মসজিদের ইমামকেও হাজির করে তটস্থ করে তুলছেন! ওই গ্রামে ‘হোম কোয়রান্টিনে’ থাকা লোকজনকে এ ভাবেই কড়া পাহারায় রেখেছেন ‘ভাবি’। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই এলাকায় লোকসংখ্যা ১২৪৩ জন। ভিনরাজ্যে কাজ করেন ১৫৫ জন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের মধ্যে ১৮ জন গ্রামে ফিরে এসেছেন। স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশ দেয়।
বছর তেতাল্লিশের আবিদা প্রতিদিন সকাল-বিকেল কয়েক ঘণ্টা গ্রামে ঘোরেন। কোয়ারন্টিনে থাকা লোকেদের খবর নেন। কারও জ্বর-সর্দি-কাশি বা অন্য কোনও অসুস্থতা আছে কি না, সেই ব্যাপারে খোঁজ নেন। নির্দেশ ভেঙে কেউ বাড়ি থেকে বেরোলেই আবিদা ‘খড়্গহস্ত’। করোনা-সংক্রান্ত সচেতনতার কাজে আবিদার ভূমিকার প্রশংসা করছেন ব্লক স্বাস্থ্য দফতর, আরামবাগ থানার আধিকারিকরাও। আশাকর্মীদের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, বাড়ি থেকেই কাজ করতে হবে। তাও ঝুঁকি নিয়ে কেন ঘুরছেন? আবিদার জবাব, ‘যথেষ্ট সাবধান হয়েই ঘুরছি। গ্রামকে রক্ষা করতে হলে বাড়িতে বসে কাজ চলে!’