দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর সিএএ পাশ করেছে মোদী সরকার। সিএএ নিয়ে মোদী সরকারের দাবি, পাশ্ববর্তী দেশগুলো থেকে মুসলিম বাদে ভারতে আসা সমস্ত ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু সিএএ আইনের মাধ্যমে মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে যে শুধুই প্রতারণা করছে এবং পরবর্তীতে করবে তা পর্দা ফাঁস হয়ে গেল এক রিপোর্টে। ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ৪ বছর ধরে ছোটাছুটি। কিন্তু তার পরেও মেলেনি নাগরিকত্ব। অবশেষে নিজের দেশ পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছেন ২৪৩ জন হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ।
সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের বরাত দিয়ে দ্য ওয়ার এই খবর প্রকাশ করে। সেখানে লেখা হয় হিন্দু ও শিখ শরণার্থী সহ ২৪৩ জন পাকিস্তানী নাগরিক, যাদের ভারত থেকে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা পাকিস্তানে ফিরে যাবেন।
দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ভারতে বসবাসরত পাকিস্তানি হিন্দু ও শিখ শরণার্থীদের একটি দলকে বৃহস্পতিবার ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হয়। আরও বলা হয়, আর্থিক সঙ্কটের কারণে ভারতীয় নাগরিকত্ব অর্জন তাদের স্বপ্নই থেকে গেল। তাদেরকে ওয়াগাহ সীমান্ত দিয়ে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ভারতে আসা ৩৭ বছরের শ্রদ্ধা ইটি নামে এক পাকিস্তানি শরণার্থী জানান, “গত চার বছর ধরে, আমি আমার স্ত্রী এবং বাচ্চাদের ভিসা পাওয়ার জন্য নয়াদিল্লিতে এফআরআরও (বিদেশি আঞ্চলিক রেজিস্ট্রেশন অফিস) যোধপুর এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ছুটে যাচ্ছি। আমি এখন নাগরিকত্ব পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি এবং আমি নিজের দেশ পাকিস্তানে ফিরে যেতে চাই।”
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে হায়দরাবাদ শহরে আসা মিঠুন নামে আরও এক শরণার্থী জানিয়েছিলেন যে তারা “আরও ভাল জীবিকার সন্ধানে ভারতে এসেছিলেন। গত এক বছর ধরে, আমরা এলটিভি (দীর্ঘমেয়াদী ভিসা) পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কোন লাভই হয়নি… লকডাউন এবং কোভিড -১৯ এর কারণে আমার পরিবার আর্থিক সমস্যায় পড়ছে। তারা এখন ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
উল্লেখ্য, মোদী সরকার নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) গত বছরের ডিসেম্বরে পাস করায়। যেখানে বলা হয় সিএএ এর অধীনে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের অমুসলিম নাগরিকরা, যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর এর আগে ভারতে এসেছেন, তাদের দ্রুত ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফিরে যেতে ইচ্ছুক পাকিস্তানি শরণার্থীদের আবেদন মূলত গুজরাট, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি থেকে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে, মাঠ যাচাইয়ের সময় হয়রানি ও দুর্নীতি প্রকাশিত হয়েছে এবং শরণার্থীদের দুর্দশাগুলি আরও বাড়িয়েছে। লোকেরা বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করতেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।