দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা দখল বিজেপির কাছে ছিল কার্যত প্রেস্টিজিয়াস ফাইট। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরেই দেখা যায় যে বাংলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। আর এরপরেই দলের মধ্যে বিদ্রোহ। ফলাফল প্রকাশের পরেই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে অনেকেই। এমনকি স্ট্র্যাটিজিতেই নাকি ভুল ছিল বলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের মধ্যে। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে দলের ফলাফল প্রকাশের পরেই একাধিক নেতা মুখ ঘুরিয়েছেন। কেউ আবার সরাসরি তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে মমতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
এই অবস্থায় ভোটের রেজাল্ট আউটের পর এই প্রথম বৈঠকে বসেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যেখানে দলের হারের পর্যালোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আগামিদিনে কীভাবে বঙ্গ বিজেপি এগীবে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতি একটু আয়ত্তে আসলেই লাগাতার আন্দোলনে নামবে বিজেপি। আগামীর রণনীতি ঠিক করতেই মঙ্গলবার দলের পদাধিকারীদের নিয়ে হেস্টিংসের দফতরে বৈঠক দিলীপ ঘোষদের।
আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সংগঠনকে এক ছাতার নিচে রাখার কৌশলও নির্ধারিত হতে পারে এই বৈঠকে। ইতিমধ্যে বিজেপির একাধিক নেতা পৌঁছে গিয়েছেণ। কিন্তু বৈঠক শুরু হলেও এসে পৌঁছননি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়। শুভেন্দু অধিকারীও দিল্লিতে। শোনা যাচ্ছে ভার্চুয়ালি থাকবেন তিনি। শুভেন্দুর এই দিল্লি সফর নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “শুভেন্দু তো জানে মিটিং আছে। তাও দিল্লি গিয়েছে। কেন গিয়েছে তা জানি না। দিল্লির নেতারা বলতে পারবেন।” মূলত বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি জেলার সভাপতিরাও এই বৈঠকে আছেন। তবে সকলেই যে সশরীরে হেস্টিংসে হাজির হয়েছেন এমনটা নয়। অনেকেই ভার্চুয়ালি রয়েছেন বৈঠকে।
ইতিমধ্যেই হেস্টিংসে এসে পৌঁছেছেন সৌমিত্র খাঁ, দুলাল বর, সব্যসাচী দত্তরা। সূত্রের খবর, দলের ঘরছাড়া কর্মীদের ঘরে ফেরানো, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে ১৯ জুন থেকে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। দলের সাংসদরা এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছেও দরবার করবেন। তবে মুকুল-রাজীবের বৈঠকে না থাকা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
শুভেন্দু নিজ-গড় নন্দীগ্রাম কোনওরকমে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। রাজীব ডোমজুড়ে তাঁর গড় রক্ষা করতে পারেননি। সেই পরাজয়ের পর থেকে সেভাবে রাজীবকে দেখা যায়নি বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে। সে অর্থের বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। এই অবস্থায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ বলতে শুরু করেছে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নতুন দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈর করে পুরনো দলে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি শিবিরের দাবি মিলে যাচ্ছে। যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ফের পুরনো দলে ফিরতে পারেন এমন জল্পনা থাকলেও, এমন কোনও পদক্ষেপ এখনও সে অর্থে প্রকট হয়নি। অন্যদিকে মুকুল রায় ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে বিজেপিমুখী হননি। এমনকি মুকুল-পুত্র বারবার প্রশ্ন তুলেছেন দলের ভূমিকা নিয়ে।