দৈনিকসমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : প্রতিবাদ করা কোনো অন্যায় নয়, তাই বন্দি সমাজকর্মীদের মুক্তির দাবি জানালেন দেশের ৩৭৮ জন বুদ্ধিজীবী। করোনা ভাইরাসের মহামারি থেকে মানুষ নিজেকে রক্ষা করতে তৎপর, তখন সিএএ-এনআরসি বিরোধী সমাজ কর্মীদের গ্ৰেফতার করে অমিত শাহের সরকার, যা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এবার সমাজকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে সরব বুদ্ধিজীবীরা।
দেশের তিনশোরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করলেন ১১ সমাজকর্মীর জেল থেকে মুক্তি চেয়ে লেখা বিবৃতিতে। সেই বিবৃতিতে অসমের অখিল গগৈ, দিল্লির সফুরা জারগার সহ বাকি রাজনৈতিক বন্দিদেরও মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে প্রথমেই ভিমা কোরেগাঁও মামলায় বর্তমানে জেলবন্দি ভারাভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, সোমা সেন, আনন্দ তেলতুম্বণ্ডে, গৌতম নাভলাখা, অরুন ফেরেইরা, ভার্নন গঞ্জালভেস, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, মহেশ রাউত, সুধীর শাওয়ারে এবং রোনা উইলসনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন আদুর গোপালকৃষ্ণন, মীরা নায়ার, অমিতাভ ঘোষ, রোমিলা থাপার , শাবানা আজমিরা। বুদ্ধিজীবীদের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রের জেলে অনেকের কোভিড-১৯ এ মৃত্যু হয়েছে। অসমের জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে মানবাধিকার তথা কৃষক নেতা অখিল গগৈকে। সারাদেশে কোভিড-১৯ যখন অতিমারির আকার নিয়েছে, তখন এই মানুষগুলোকে জেলে বন্দি করে রাখার অর্থ হল এঁদের জীবন বিপন্ন করে তোলা। বুদ্ধিজীবীরা বন্দি সমাজকর্মীদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
সিএএ-এনআরসি বিরোধিতায় সরব জেএনইউ এবং জামিয়ার পড়ুয়াদের ফৌজদারি মামলা রুজু করে আটক রাখা হয়েছে। তাঁদেরও জামিন দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অনেকে বলছেন, লকডাউনের এই সময় গ্ৰেফতার করা হয়েছে যা সংকীর্ণ রাজনীতির ফল।
বুদ্ধিজীবীদের ওই বিবৃতিতে অর্পণা সেন, কঙ্কনা সেন, প্রকাশ রাজ, নাসিরুদ্দিন শাহ, জহর সরকার, টি এম কৃষ্ণা, অনুরাগ কাশ্যপরা আবেদন করেছেন ধৃতদের যেন মানবিকতার খাতিরে জামিন দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অতিমারির সমঢ় ইচ্ছাকৃতভাবে জেলে বন্দি করে রাখার ফলে যদি তাঁরাও সংক্রমিত হন, সেজন্য দায়ী থাকবে সরকার। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরের প্রতিবাদী কন্ঠকে চুপ করানোর চেয়ে এই মুহূর্তে অতিমারিকে জেল এবং জেলের বাইরে কীভাবে ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়, সেদিকেই বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই দেশ – বিদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বন্দি রাজনৈতিক ও সমাজকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটির কৃতী পড়ুয়া সফুরা জারগার গর্ভবতী হওয়া সত্ত্বেও গ্ৰেফতার করা হয়। বারবার আবেদন করেও তাঁর জামিন মেলেনি বলে অভিযোগ। সফুরার মুক্তির দাবিও জোরালো হয়েছে বার বার।