সুরাইয়া খাতুন
দেশজুড়ে মুসলিমদের হেনস্থা ও তাঁদেরকে যে টার্গেট করা হচ্ছে, তা আজ বহির্বিশ্বেও নিন্দিত। সরকার মুসলিমদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করেই যাচ্ছে। তার বেশ কয়েকটি প্রমাণ আমরা দেখেছি। অনুরাগ ঠাকুর বা শাহীনবাগে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো সেই বন্দুকবাজকে তো জেলে পুরতে দেখিনি। অথচ জেলে যেতে হয় মানবিক ডাঃ কাফিল খানকে, শারজিল ইমামকে, সফুরা জারগারকে।
ফ্যাসিবাদী সরকার সংখ্যালঘুদের দেশছাড়া করতে এনআরসি ও সিএএ র মতো কালা কানুন এনেছে। এই আইন ভারতের ১৮ কোটি সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক ও দেশের ধর্ম নিরেপক্ষতা ও সংবিধানের বিরোধী। আর এই আইনের বিরোধিতা করায় গত ১০ এপ্রিল সিএএ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিক্ষার্থী সফুরা জারগার ও মিরান হায়দারকে গ্রেফতার করা হয়। অন্তত ছয় মাসের জেল হতে পারে তাঁদের।
দুঃখের বিষয় হল, সফুরা জারগার তিন মাসের গর্ভবতী। এই অবস্থায় তিহাড় জেলেই কাটছে মানসিক চাপের মধ্যে। কোয়ারেন্টাইনের নামে সফুরাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। এটি তাঁর ওপর মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। স্বামী সবুর আহমেদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার জন্য পাঁচবার আবেদন করলেও করোনার অজুহাতে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এরই মাঝে বিজেপির কপিল মিশ্রসহ একাধিক নেতারা লাগাতার প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে যে, সফুরার নাকি বিয়েই হয়নি। বিয়ে না করেই সে কিভাবে গর্ভবতী হল, আন্দোলন চালাতে হয়তো কারোর সাথে মেলামেশা করার ফল ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা সেই মানুষ যারা সীতাকেও অগ্নিপরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছিল।