সামাউল্লাহ মল্লিক, দৈনিক সমাচার, কলকাতা : তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সাধারণত দেখতে পাওয়া যায় বাসে, ট্রেনে হাততালি বাজিয়ে যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে। অথবা কখনও কখনও পাড়ায় একদল তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের দেখা মেলে, যদি সেই পাড়ায় কোনও বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হয়। এক্ষেত্রেও তাঁদের একই কাজ, টাকা আদায় করা। এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের দৌরাত্ম্যে হাঁফিয়ে উঠেছে আমজনতা। কিন্তু এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মধ্যেও কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের জীবনকাহিনী একটু অন্যরকম।
রানি মজুমদার। একজন ট্রান্সজেন্ডার লেখিকা। তিনবার সাহিত্য একাডেমি দ্বারা আমন্ত্রিত কবি। নিজে কষ্ট করেও একটি লিটল ম্যাগাজিন চালান। এতকিছুর পরেও সরকারি সহায়তা পাননি রানি। ১০০ বছরের জেঠিমাকে নিয়ে থাকেন তিনি। রেশন কার্ড নেই আট বছর। বিডিও, জয়েন্ট বিডিও, খাদ্য দফতর সকলের কাছে আবেদন করেও মেলেনি কোনও সাহায্য। এমনকি খাদ্য মন্ত্রীকে ফোনে দু’বার ও মেসেজে দু’বার বিস্তারিত জানিয়েছেন। জেঠিমাকে যেন বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হয় সেই আবেদনও করেছেন।
বিস্তারিত শুনে খাদ্য মন্ত্রী বিডিও’র সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ব্যাস, ঐটুকুই! কেউ ঘুরেও তাকায়নি রানির দিকে। কেন এত অবহেলা প্রশাসনের? তাঁর প্রতি প্রশাসনের এই দুর্ব্যবহার কেন? চোখের জল মুছতে মুছতে প্রশ্ন করলেন রানি। তবে কি কলমের আঁচড় টেনে সমাজকে সমৃদ্ধ করার লড়াইয়ে নেমে ভুল করেছেন তিনি? লেখিকা হওয়া কি দোষের? এই মহান পেশা কি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য না? তবে কি কলম ছেড়ে ট্রেনে-বাসে হাততালি বাজানোই আসল পরিচয় হবে রানিদের? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।