শ্যামল মৈত্র : সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিবসটি শিক্ষক দিবস হিসেবে সারা দেশে পালিত হয়। কিন্তু জানেন কি, যে দুই খণ্ডের ‘ইন্ডিয়ান ফিলজফি’ গ্রন্থের জন্য রাধাকৃষ্ণণের প্রসিদ্ধি, অভিযোগ উঠেছিল যে, সেটি আদপেই তাঁর লেখা নয়? সেটি নাকি লিখেছিলেন যদুনাথ সিংহ।
যদুনাথ ১৯১৭ সালে এমএ পাশ করার পর, তাঁর গবেষণাপত্রের প্রথম খণ্ড ১৯২২ সালে এবং দ্বিতীয় খণ্ড ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেমচন্দ রায়চন্দ স্কলারশিপের আবেদনের সঙ্গে জমা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, এই গবেষণাপত্রের দ্বিতীয় খণ্ড থেকেই অনেকটা নকল করে, রাধাকৃষ্ণণ গ্রন্থাকারে ১৯২৭ সালে লন্ডন থেকে স্বনামে প্রকাশ করেন। ওই সময়ে রাধাকৃষ্ণণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। যদুনাথ তাঁর অসাধারণ মেধা ও পাণ্ডিত্যের জন্য ১৯২৩ সালে গ্রিফিথ পুরস্কার, ১৯২৪ সালে মোয়াট মেডেল ও তার আগে ১৯১৫-১৬ সালে ক্লিন্ট মেমোরিয়াল ও ফিলিপ স্মিথ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।
রাধাকৃষ্ণণ গ্রন্থটি লন্ডন থেকে প্রকাশ করার বেশ কিছু দিন পর তা যদুনাথের নজরে আসে। তাঁর মতে, বইটির অনেকটা অংশ তাঁর গবেষণাপত্রের হুবহু নকল। তিনি ১৯২৯ সালের ২২ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। যদুনাথকে নানা ভাবে সহযোগিতা করেন ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়।
অনেক দিন মামলা চলার পর, একটা ‘আউট অব কোর্ট সেট্লমেন্ট’ করা হয়। অনেকে বলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যদুনাথের উপর চাপ সৃষ্টি করেন, যাতে তিনি মামলা প্রত্যাহার করে নেন। আমাদের মনীষীপূজার দেশে, এগুলো জেনে রাখলে মন্দ হয় না।