Thursday, February 6, 2025
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

থমকে গিয়েছে বিজেপির সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন, রাজ্য সভাপতির পদ হারাতে পারেন দিলীপ

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের নির্বাচনে কাঙ্খিত সাফল্য আসেনি। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য থেকে বহু দূরে থমকে গিয়েছে বিজেপি। তাই ভোট পরবর্তী সময়ে বিজেপির অন্দরেই বইতে শুরু করেছে পরিবর্তনের হাওয়া। এই পরিবর্তনের হাওয়ায়, সবথেকে বেশি নড়বড়ে লাগছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ। এই পদে দিলীপের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।

দিলীপ ঘোষ ২০১৫ সালে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে লাল মাটির দিলীপ দায়িত্ব নেওয়ার পর জোয়ার এসেছিল, তা নিশ্চিত। বিজেপি বাংলায় সংগঠন বাড়িয়ে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছিল। তার ফল মিলেছিল ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। তারপর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি অভূতপূর্ব সাফল্য পাওয়ার পর ২০২১-এ তাঁর নেতৃত্বেই লড়তে চেয়েছিল বিজেপি। ফলে তাঁর রাজ্য সভাপতির মেয়াদ পূর্ণ সময়ের জন্য বাড়ানো হয়। অর্থাৎ ২০২১ পর্যন্ত তিনি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি মনোনীত হন। কিন্তু একুশের ভোটে শোচনীয় ব্যর্থতার পর মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাঁর সভাপতি পদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়েছে দলে।

এই অবস্থায় বিজেপির সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের পরিবর্তে উঠে পড়েছে বর্ষীয়ান নেতার নাম। মোদী ঘনিষ্ঠ সেই নেতা হলেন স্বপন দাশগুপ্ত। কেননা বিজেপি রাজ্য সভাপতি হিসেবে বর্তমানে এমন একজনকে চাইছে, যিনি আদি বিজেপির নেতা ও দলবদলু নেতাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারবেন। আর স্বপন দাশগুপ্ত এই পদের উপযুক্ত ব্যক্তি হতে পারেন বলেই মনে করছে বিজেপি।

 

একুশের ভোটের আগে বিজেপিতে প্রচুর দলবদলু নেতার ভিড় জমেছে। তাঁদের অনেকেই এখন বিজেপিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। ফলে আদি বিজেপি নেতা ও দলবদলুদের মধ্যে একটা ঠান্ডাযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিজেপির আদি নেতারা এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, দলবদলু নেতাদের জন্যই দলের এই বিপর্যয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্বপন দাশগুপ্তের মতো একজন নেতাই হাল ধরতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

দিলীপ ঘোষের সভাপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হবে ২০২১-এর ডিসেম্বরে। তার আগে যদি বিজেপির সভাপতি পদে পরিবর্তন আনতেই হয়, তবে স্বপন দাশগুপ্তের মতো নেতা যে উপযুক্ত হবেন, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, এতদিনে সঙ্ঘ পরিবারও বুঝে ফেলেছে গোবলয়ের রাজনীতি আর বাংলার রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা।

সঙ্ঘ পরিবার ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, বাংলা তখনই বিজেপিকে আপন করে নেবে, যখন বাংলার আবেগ বুঝতে পারবেন তাঁরা। সেইসঙ্গে নেতৃত্বে এমন একজনকে চাই যাঁর ভাবমূর্তি হবে স্বচ্ছ। সভ্য, ভদ্র, মার্জিত পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির বাঙালি স্বপন দাশগুপ্ত। বিজেপি বর্তমানে এমন একজনকে নেতৃত্বে চাইছেন, যাঁর সমস্ত শর্ত পূরণ করতে পারেন স্বপনবাবুই।

স্বপন দাশগুপ্ত এই কারণেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন যে, তাঁর মুখ থেকে কটূ কথা বেরেয় না। তিনি আদি ও নব্য নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলতে পারেন। মোদী ঘনিষ্ঠ নেতা তিনি। অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর তুখোড় যোগাযোগ। তারপর রাজ্যে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের সঙ্গে তিনি সমান স্বচ্ছন্দ। বিজেপির সমস্ত শিবিরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রেখে চলার ক্ষমতাই তাঁকে এই লড়াইয়ে অগ্রগণ্য করে তুলেছে।

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!