দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূল একুশের ভোটে বিপুল আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গে অনেক আসনে তাঁদের হারতে হয়েছে। তার পিছনে কী কারণ, তা জানতেই গোপন-তদন্ত শুরু করেছিল তৃণমূল। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকের তদন্তে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু আসনে হারের ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু কারণ।
তৃণমূল এবার ভোটে বিপুল জয় পাওয়া সত্ত্বেও পাহাড় ও তরাই-ডুয়ার্স এবং সংলগ্ন সমতলের জেলাগুলিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। দার্জিলিং থেকে শুরু করে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে শোচনীয় ফল হয়েছে তৃণমূলে। আই প্যাকের তদন্ত উঠে এসেছে, চার জেলায় হারের কারণ হল বিশ্বাসঘাতকতা।
আই প্যাক মনে করছে, চার জেলার মাঝারি ও ছোট মাপের কিছু নেতা পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন দলকে। এছাড়া রয়েছেন দুর্নীতির কারণ। বেশ কিছু নেতা দুর্নীতিতে জড়িত, আমজনতার কাছে তাঁদের ভাবমূর্তি খুব উজ্জ্বল নয়। তার প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সে। ফলে বিজেপির কাছে হার মানতে হয়েছে তৃণমূলকে।
প্রশান্ত কিশোরের টিমের থেকে এমন তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তৃণমূল বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এরপর বিশ্বাসঘাতক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তারা। আই প্যাক বিশ্বাসঘাতক ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের তালিকা-সহ তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়েছে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রশান্ত কিশোরের টিম সুপারিশ করেছে বিশ্বাসঘাতক ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের ছেঁটে ফেলতে। সেই সুপারিশ মেনে উত্তরবঙ্গের চার জেলার বেশ কিছু নেতাকে দল থেকে ছেঁটে ফেলার তোড়জোড় শুরু করেছে তৃণমূল। টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরলেও উত্তরবঙ্গের ফল নিয়ে যে তৃণমূল সন্তুষ্ট নয়, এটা তার প্রমাণ।
কোচবিহার থেকে শুরু করে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের সমতল ক্ষেত্র মিলিয়ে মোট ২৪টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৫টি আসনে জিততে পেরেছে তৃণমূল। বাকি ১৯টি আসনে বিজেপি জয়যুক্ত হয়েছে। আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিং থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূলকে।
তৃণমূল কংগ্রেস আশা করেছিল অন্তত আরও পাঁচ-সাতটি আসন তাঁরা পাবে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। কেন এই খারাপ ফল তা নিয়ে ময়নাতদন্তে নামে তৃণমূল। প্রশান্ত কিশোরের আই প্যাক টিমকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের তদন্ত থেকে যে নির্যাস উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট যে, ওইসব নেতাদের না সরালে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে চারটি আসন পুনরুদ্ধার করা যাবে না।