দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: দলবিরোধী কাজের জন্য ২০১৯ সালে ২৪ মে ৬ বছরের জন্য মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়কে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। কিন্তু ১১ জুন ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সপুত্র মুকুল রায়। আর এতেই উঠছে প্রশ্ন। ২০১৯ সালে ২৪ মে ৬ বছরের জন্য যদি শুভ্রাংশুকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল, তবে ২০২১ সালে ১১ জুন ৬ বছর হয় কি করে?
২০১৯ সালে ২৪ মে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের তরফ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুভ্রাংশুকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হল। তাঁর ব্যবহার দলবিরোধী। অনেক দিন ধরেই এই ব্যবহার চলছিল। দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল দল”। তৃণমূলের এই ‘৬ বছরের জন্য সাস্পেন্ড”এর সিদ্ধান্তকে কার্যত ‘বহিষ্কার’এর সমান বলে মনে করছিল রাজনৈতিক মহল।
সেই সময় লোকসভা নির্বাচনে বাংলাতে ১৮টি আসন দখল করে গেরুয়া শিবর। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘গর্ব বোধ করি বাবাকে নিয়ে। অনেকে বলেছিলেন, লক্ষ লক্ষ মুকুল রায় তৈরি করবেন। যে (মুকুল) দল তৈরি করেছিল, সেই দলকে তছনছ করে দিল। কাঁচরাপাড়ার সেই কাঁচা ছেলেই তাঁর কাঁচা মাথা দিয়ে চাণক্যের বুদ্ধিতে সারা বাংলা চষে বেড়ালেন’’। কার্যত এই বক্তব্যের পরেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল। সাংবাদিক বৈঠকে এসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তিনি এই দলে থেকে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের প্রশংসা করছেন নিজের দলকে হেয় করে। সুদীর্ঘ সময় ধরে দল তা লক্ষ্য করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধায়ের অনুমোদনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”।
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানোর পর থেকেই রীতিমতো অস্বস্তিতে ছিলেন শুভ্রাংশু। তৃণমূল দলের প্রতি তাঁর ‘দায়বদ্ধতা’র কথা বারবার জনসমক্ষেও বলেছেন তিনি। কিন্তু, এরপরও দল তাঁকে ‘সন্দেহের চোখে’ দেখে বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বীজপুরের সাংসদ। নির্বাচন চলাকালীন তাঁর বিজেপিতে যোগ দান প্রসঙ্গে একাধিকবার জল্পনাও তৈরি হয়েছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তিনি তা অস্বীকার করেন। এর আগে দলের অন্দরে তাঁর অস্বস্তির কথা একাধিকবার বললেও, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে কখনও খামতি ছিল না। কিন্তু, সাংবাদিক বৈঠকে শুভ্রাংশু বলেন, মুকুল সম্পর্কে মমতার ‘গদ্দার’ শব্দ প্রয়োগ মানুষ ভালভাবে নেয়নি।