দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বাংল ফের নিজেদের দখলে। এবার দিল্লির জন্য লড়াই। আর জন্য রাজ্যের বাইরেও সংগঠনের শক্ত জাল বুনছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রসারে উদ্যোগী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের প্রথম সারির সাংসদদের বাংলার বাইরে দলকে ছড়ানোর এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই তৃণমূল নেত্রী এই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।
শনিবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকের পর দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলার বাইরে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা কাজ শুরু করব। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতো সাংসদরা রাজ্যের বাইরে সংগঠন মজবুত করার কাজ করবেন। বাংলার বাইরে তৃণমূল কংগ্রসের বিস্তারে তাঁরা কাজ করবেন।’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন টুইট করে বলেছেন, ‘আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা চালাব।’ অভিষেকের মতো তরুণ নেতার নেতৃত্বে বাংলার বাইরে তৃণমূলের বিস্তারের কাজ শুরু হবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন প্রবল পরাক্রমশালী বিজেপিকে মমতা একক ক্ষমতায় কার্যত উড়িয়ে দেওয়ার পর তৃণমূল নেত্রী এখন সর্বভারতীয় স্তরে নিজেকে বিজেপি-বিরোধী অন্যতম প্রধান মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মমতাকে আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইদানীং সরব নেটিজেনদের একটা বড় অংশ।
তবে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতা নতুন উচ্চতায় উঠে এলেও তৃণমূল এখন পুরোপুরি পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রিক একটি রাজনৈতিক দল। বাংলার বাইরে তৃণমূলের প্রভাব এখন নেই। এক সময়ে ত্রিপুরায় তৃণমূলের উত্থান হলেও পরে সেখানে তৃণমূল তার সংগঠন ধরে রাখতে পারেনি। একই ভাবে মণিপুর-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য কয়েকটি রাজ্যে তৃণমূলের সংগঠন তৈরি হলেও পরে তা টেকেনি। এমনকী, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরাও অন্য দলে চলে গিয়েছেন। মুকুল রায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থাকার সময়ে দক্ষিণ ভারতের কেরালা থেকে উত্তরপ্রদেশ-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূলের ইউনিট তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব শাখা ক্রমেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেই বাংলার বাইরে তৃণমূলের ফের প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রথম লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে ত্রিপুরা ও অসম।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ২০২৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে হলে বাংলার বাইরে তৃণমূলের উপস্থিতি প্রয়োজন। এই আবহেই দিল্লির কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, তিনি কলকাতায় এসে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চান। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে মমতার সঙ্গে টিকায়েতের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা।