দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : রাজ্যের ৩০ থেকে ৩৫ জন তৃণমূলের বিধায়ক রয়েছেন যাদের সঙ্গে বিজেপি ও আরএসএসের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তৃতীয় বারের জন্য তৃণমূলকে ক্ষমতায় আসতে গেলে এই সমস্ত বিধায়কদের নমিনেশন দেওয়া বন্ধ করতে হবে তৃণমূলকে। এ বিষয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন ফুরফুরা দরবার শরীফের মুখ্য নির্দেশক পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী।
পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী এ প্রসঙ্গে বলেন, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এমন ৩০ থেকে ৩৫ জন বিধায়ক রয়েছেন যাদের ২০২১ সালের টিকিট দেওয়া উচিত নয়। এই সমস্ত বিধায়করা মূলত, হাওড়া, হুগলি , উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের। তারা দিনের বেলা তৃণমূল করছেন আর রাতে বিজেপি আরএসএসের হয়ে প্রচার করছেন। এমনকি বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিএমের কিছু নেতাও রয়েছেন তারাও গেরুয়া শিবিরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, ‛তৃণমূল পরিচালিত সরকার বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। রাস্তা তৈরি, বিদ্যুতায়ন, প্রতিটি গ্ৰামে পানীয় জল সরবরাহ ইত্যাদি। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের ইস্যুটি উপেক্ষিত থেকে গেছে। আমি মনে করি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্বসহকারে বিষয়টি বিবেচনা করবেন। তবে উন্নয়নের প্রসঙ্গে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দোষারোপ করতে পারি না। কারণ গত ৯ বছর ধরে তিনি রাজ্যে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। কিন্তু তার দলের কিছু নেতা রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, তৃণমূল কংগ্রেস আবার ক্ষমতা আসবে ২০২১ এর বিধানসভার নির্বাচনে, তবে যদি এই সমস্ত ইস্যুগুলোকে দলনেত্রী গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন।
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা তুলে ধরে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, এই বাংলা হল সম্প্রীতির বাংলা। এখানে বিজেপি কেন কোনও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। পিছিয়ে পড়া তপসিলি জাতি, তপসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ বুঝতে পেরেছে বিজেপির উগ্ৰ সাম্প্রতিক নীতি ও উদ্দেশ্য। তাই বাংলার মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে না এটা তিনি নিশ্চিত। আর এই বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ একচেটিয়া সমর্থন করে আসছে ২০১১ সাল থেকে। অর্থাৎ বাংলার ৩০ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেয়ে আসছেন। এই মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থনের কারণেই ৩৪ বছরের বাম শাসনের হাত থেকে বাংলার শাসন ক্ষমতা তিনি ছিনিয়ে নিতে পেরেছিলেন।
তিনি বলেন, পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, মুসলিমদের সমর্থন পাওয়ার কারণে বাংলা ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭৫ আসনে সরাসরি জয়ী হয়েছে তৃণমূল বিধায়করা। আর ৩৫ থেকে ৪০ টি এমন আসন ছিল যেখানে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিয়েছে মুসলিম ভোটাররা।