দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। ফের গো-রক্ষকদের তাণ্ডব। ফের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা। স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের একটি দল পিটিয়ে হত্যা করল এক মুসলিম যুবককে। গুরুতর জখম হয়েছে নিহত ওই যুবকের আরও চার সঙ্গী। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম শেরা খান। গুরুতর আহত তার বাকি চার সঙ্গীর নাম আনিস, রহমান, শাহজাদ ও কাদিম। তারা মথুরার কোসি কালান গ্রাম থেকে গরু পাচার করে মেওয়াটে নিজেদের গ্রামে যাচ্ছিল এই দাবি তুলে গো-রক্ষকরা শেরা ও তার সঙ্গীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় গণপিটুনি।
একটি সংবাদমাধ্যমে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বারসানা আশ্রমের পুরোহিত চন্দ্রশেখর বাবা। তিনি স্বীকার করেছেন, যখন এই লিঞ্চিং হয় তখন তিনি অকুস্থলে ছিলেন। ওই পুরোহিতের কথায়– ‘ভোর সাড়ে ৩টা নাগাদ আমার কাছে একটি ফোন আসে। আমাকে বলা হয় একদল লোক গরু পাচার করছে। ফোনে এই খবর পেয়েই একটি বাইকে করে আমি ও আরও একজন ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হই।’ওই ৫ জনকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ৬টি গরু ও একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। যদিও যোগীর পুলিশ আবার এই পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গুলি চালানোর তত্ত্ব খাড়া করেছে। পুলিশ দাবি করেছে– গরু নিয়ে যেতে বাধা দেওয়ায় শেরা ও তার সঙ্গীরা গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পালটা হামলায় নিহত হয় শেরা। যদিও পুলিশ বলতে পারেনি, শেরা ও তার সঙ্গীদের গুলিতে কতজন গ্রামবাসী জখম হয়েছে।
মথুরার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার শিরীষ চাঁদ জানান, গরু পাচারের ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেরার চার সঙ্গীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসার জন্য তারা এখন হাসপাতালে। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ সুপারের বক্তব্য ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, ওই পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, গরু পাচারের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করা হবে। অথচ, যারা প্রকাশ্যে এভাবে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করল তা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। পিটিয়ে হত্যাকারী গো-রক্ষকদের শাস্তির ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করলেন না। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি যোগীর পুলিশ গো-রক্ষকদের আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে?