দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: দোকান বন্ধ করতে দোকানদারদের হাতে গণপিটুনি খেলেন খোদ পুলিশ। ঘটনা বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে। পুলিশের দাবি, কোভিড কার্ফু মেনে এলাকার দোকান-পাট বন্ধ করতে বলার কারণেই জনরোষের শিকার হন তাঁদের এক কর্মী। স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, আক্রান্ত এই পুলিশকর্মীই প্রথমে এক গ্রামবাসীকে মারধর করেন। তারই পাল্টা এই গণধোলাই। লোহার রড, লাঠি, কিল-চড়- মাটিতে ফেলে পুলিশ পেটায় বেশ কয়েক জন।
এই ঘটনার দু’-তিনটি ভিডিয়ো এ দিন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটিতে দেখা গিয়েছে, ক্যামেরার সামনেই পুলিশকে নিশানায় রেখে অকথ্য গালিগালাজ করছেন এক গ্রামবাসী। তাঁর মাথায় সাদা ফেট্টি বাঁধা, কপাল থেকে রক্ত ঝরছে। এলাকাবাসীর দাবি, কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই পুলিশ এসে তাঁকে মারধর করেন। তার ‘বদলা’র ছবি দেখা গিয়েছে দ্বিতীয় ভিডিয়োতে। মেঝেয় পড়ে কাতরাচ্ছেন পুলিশকর্মী। তবু থামছে না মার। বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালিয়ে এলাকা ছাড়েন গ্রামবাসীরা। আক্রান্ত পুলিশকর্মীর যেন তখনও উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। তাঁর আশেপাশে ছড়িয়ে লাঠি-রড। কেন মারল আপনাকে? আক্রান্ত ওই পুলিশকর্মীর দাবি, তিনি শুধু কার্ফু মেনে দোকান বন্ধ করার কথা বলেছিলেন।
ওই থানারই আর এক অফিসার শশাঙ্ক জৈন পরে এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সকালেই খবর পাই যে ওই ঝামতুলি গ্রামে কোভিড-বিধি বা কার্ফু কিছুই মানা হচ্ছে না। আমাদের টিম গিয়ে পৌঁছয় গ্রামে। তবে গ্রামবাসীরা যে এ ভাবে হঠাৎ খেপে যাবেন, আমরা কেউই তা আন্দাজ করতে পারিনি। তবু আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। পুরো বিষয়টা জানা গেলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চলতি সপ্তাহের গো়ডাতেই উজ্জ্বয়নের মালিখেড়ি গ্রামে টিকার ব্যাপারে জনসচেতনতা প্রচারে গিয়েছিলেন প্রশাসনের এক মহিলা আধিকারিক। তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গে যাওয়া মেডিক্যাল টিমকে ঘিরে ধরে স্থানীয়েরা যে ভাবে হেনস্থা করেছিলেন, তার ভিডিয়ো এখনও রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর মধ্যে পুলিশ পোটানোর নতুন ভিডিয়ো।
রাজ্যবাসীর একাংশের অবশ্য দাবি, এই ক’মাসে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনও কম অত্যাচার করেনি। গত ৮ এপ্রিল পরদেশিপুরার দুই কনস্টেবল এক অটোচালককে মাস্ক না-পরার জন্য বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়। এমন আরও তিনটি ‘পুলিশি জুলুমের’ কথা উল্লেখ করে আদালতে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি সংগঠন। সেই মামলার শুনানিতেই বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশকে সমঝে চলার বার্তা দিয়েছিল হাইকোর্ট।