দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: মনে আছে মালদার আফরাজুলের কথা। শম্ভুলাল রেগাল তাকে কুপিয়ে জখম করার পর ডিজেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে হত্যা করেছিল। ফল কি হয়েছিল? তাকে শাস্তি দেওয়ার বদলে আরও পুরস্কৃত করেছিল বিজেপি ও উগ্ৰ হিন্দুত্ববাদীরা। এমনকি শম্ভুলাল কে লোকসভার টিকিটও দিতে প্রস্তুত ছিল বিজেপি। যদিও দেশজুড়ে প্রতিবাদের ফলে পিছিয়ে আসে। আফরাজুলের পর এবার পরমেশ্বর নামের বাংলার আরেক পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করল বিজেপি শাসিত হরিয়ানা।
জানা গেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ গোপালনগরের বাসিন্দা তিরিশ বছরের পরমেশ্বর ধারা। তাকে হরিয়ানার গুরুগ্রামে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, পরমেশ্বর গত সাত মাস আগে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে হরিয়ানাতে যায়। রবিবার তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে খবর এসেছে গ্রামে।
এই ঘটনা জানার পর থেকেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। কীভাবে এবং কেন এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে পরিবারটি। এদিকে জানা গিয়েছে পরমেশ্বরকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুগ্রামে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। এই ঘটনা নিয়ে উৎকন্ঠায় রয়েছেন পরমেশ্বরের বৃদ্ধা মা ও প্রতিবেশীরা। পরমেশ্বরের এই মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় পরিবার। এমনকি সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তাঁরা।
তবে শুধু পরমেশ্বর ধারার মৃত্যু নয়, গত মাস দুয়েক আগে পাথরপ্রতিমার অসিত দাস নামে এক যুবককে দিল্লিতে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। অসিতও পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ভিন রাজ্যের ঘটল।
উল্লেখ্য, গত বছর লকডাউনের পর থেকেই দুর্যোগ নেমে এসেছিল ভিন রাজ্যে কর্মরত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে। কাজ হারিয়েছিলেন বহু। তারপর ছিল করোনার আতঙ্ক নিয়েই স্বভূমিতে ফেরার তাগিদ। পায়ে হেঁটে ফিরতে চেয়ে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছিল রাস্তায়। কিন্তু ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া বাংলার শ্রমিকদের পিটিয়ে মারার ঘটনা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ বৃদ্ধি রাজ্যে।