দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার বাসুদেব দাস বাউলের বাড়িতে ভারতবর্ষের সংবাদ মাধ্যম ভিড় করেছিল। অমিত শাহ খেয়েছিলেন বোলপুর এসে তার বাড়িতে। মঙ্গলবার দুপুরেই তার তাল কেটে গেল। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তাকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। বাসুদেববাবুর কন্যার পড়ার দায়িত্ব নিলেন তিনি।
নিজে হাতে রান্না করেছিলেন সকাল থেকে। আপ্যায়নের কোনও ত্রুটি রাখেননি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিমন্ত্রণ রক্ষা করেছিলেন বাসুদেব দাস বাউলের বাড়িতে। অমিত শাহ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয়- রাজ্য বিজেপি নেতারা মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন। কিন্তু বাসুদেববাবুর সঙ্গে কোনও কথা বলেননি অমিত শাহ। গান শুনে, দুপুরে খেয়ে চলে গিয়েছেন নিজের কর্মসূচিতে।
হতবাক হয়েছেন বাসুদেববাবু এমন ব্যবহারে। নিজের অভাব, অনটনের কথা বলতেন তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। বাসুদেববাবুর মেয়ে এমএ পাশ করে বসে আছে। পড়ার ব্যবস্থা করার জন্য বলতেন তিনি। কিন্তু কিছুই আর বলা হল না। কার্যত শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে বাসুদেববাবুর মনে। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। অনুব্রত মণ্ডল তার মেয়ের পড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। যে কোনও সমস্যায় রাজ্য সরকার, তৃণমূল কংগ্রেস ও অনুব্রত মণ্ডল আছেন ওই পরিবারের সঙ্গে। একথা বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সামনে আক্ষেপ করেছেন বাসুদেব দাস বাউল। তিনি বলেন, “আমি নিজের বাড়িতে রেশনের চাল খাই। অমিত শাহের জন্য মিনিকেট এনেছিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে কোনও সাহায্যই করেনি। এমনকী, খাওয়ানোর পর থেকে কেউ যোগাযোগও করেনি। আমি ভেবেছিলাম অমিত শাহকে বলব যে আমার মেয়ে এমএ করে বসে আছে। টাকার জন্য ডিএড করতে পারেনি। কিন্ত বলা সম্ভব হয়নি। উনি সেবা করে চলে যান।”
বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “অমিত শাহ এসেছিলেন। ওর বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করেছিলেন। কিন্ত ও নিজের কিছুই কথা বলতে পারেনি। নাটক করতে এসেছিল। নাটক করে চলে গিয়েছে। ওর মেয়ে ডিএড করতে চায়। সেই কারণে আমাদের শিক্ষা সেলের দায়িত্বে থাকা প্রলয় নায়েকের সঙ্গে যোগযোগ করেছিলেন। দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে মেয়েকে ডিএড করানো সম্ভব না ওর। তাই আমি বলে দিয়েছি ওকে ডিএডটা করিয়ে দিতে।”
বাসুদেব দাসকে নিজেদের দিকে আনতে পারা একটি সাফল্য। মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অনুব্রতের গড়ে অমিত শাহ রোড শো করেছেন। সোনার বাংলা গড়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই বাসুদেব দাসের ঘরে এবার ঢুকে পড়ল তৃণমূল। বিজেপিকে পালটা গোল দিল তৃণমূল।