নিজস্ব সংবাদদাতা, দৈনিক সমাচার, অসম: কাছাড়-মিজোরাম সীমান্তে দুস্কৃতীদের গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেন অসমের ৬ পুলিশ কর্মী। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‛আমরা বাঙালী’ । আমরা বাঙালীর অসম রাজ্য কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্থ এক প্রেস বিবৃতিতে জানান, গতকাল অসমের কাছাড়-মিজোরাম সীমান্তের লায়লাপুরে মিজোরামের সরকারী মদতপুষ্ট ইয়ং মিজো এসোসিয়েশন, মিজো জিরলাই পল ও মিজোরামের পুলিশ সন্মেলিতভাবে অসম পুলিশ ও সাধারণ নাগরিকের উপর গুলিবর্ষণের তীব্র ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানায় আমরা।
“আমরা বাঙালী”র মতে উপরিউক্ত নারকীয় ঘটনায় মধ্যে দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম ভারতবর্ষের প্রতি একটি হুমকি দেওয়া। সাধন পুরকায়স্থ আরও বলেন, যে আক্রমণে কাছাড়ের পুলিশ সুপার সহ ৭০ জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন এবং ৬ জন অসম পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়ে শহীদ হয়েছেন। আমরা দেশের অখন্ড সত্ত্বা যারা ধ্বংস করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ২০২০ সাল থেকে বলে আসছি। চলতি মাসের ১২ তারিখ এক বিবৃতিতে সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার দাবী জানিয়েছি। বিগত একবছর যাবৎ অসমের বরাক উপত্যকার জমি মিজোরা যে ভাবে সরকারী মদতে দখল করছে, সীমান্তে মিজো পুলিশ সামরিক বাঙ্কার তৈরী করে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরী করেছে ।সীমান্তে ঘনঘন বোমা বর্ষণ করে আতঙ্ক তৈরী করে সীমান্তবাসীকে উৎখাত করেছে। দুইটি স্কুল বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। ইন্তাজ আলী নামক যুবককে সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে খুন করেছে । অসমের সীমনায় রাস্তা তৈরী করছে । অসমের সীমানায় বনবিভাগ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতির ব্যাপারে অসম সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। প্রশাসনিক স্তরে দিল্লিতে সীমা বিবাদ নিয়ে মিজোরামের মুখ্যসচিবকে ডেকে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা থেকে শুরু করে কিছুই বাকি থাকেনি , কিন্তু পরিস্থিতি উন্নতি হয়নি। তার কারণ, মিজোরামে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা বলতে মিজোরাম সরকারের কিছুই নেই। ইয়ং মিজো এসোসিয়েশন ও মিজো জিরলাইপল সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে। সরকার ভারতবর্ষ ও ভারতীয় বিদ্বেষী উগ্র মিজো জাতীয়তাবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ।
এই পরিস্থিতিতে “আমরা বাঙালী” দল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবী রাখছে– অবিলম্বে দেশের ঐক্য ও অখন্ডতার স্বার্থে মিজোরামের শাসনভার কেন্দ্রের হাতে তুলে নেওয়া হোক। সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নির্দ্ধারন করা অসম-মিজোরামের সীমান্তে সামরিক বাহিনীকে দিয়ে সীমার সুরক্ষা দেওয়া, গতকালের লায়লাপুরে গুলিবর্ষণে নিহত পুলিশ কর্মীদের শহীদ হিসেবে ঘোষনা করা , শহীদ পরিবারদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, পরিবারের একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরী দেওয়া, আহতদের সরকারীভাবে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
অবিলম্বে যদি মিজো দুষ্কৃতীদের দমন করার পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয় আমরা বাঙালী বৃহৎ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের নামবে বলে হুমকিও দিয়েছেন তিনি । সেই সঙ্গে “আমরা বাঙালী” দল আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা ও নিহতদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।