দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: সকাল থেকেই ছাপ্পাভোটের অভিযোগ উঠছিল। আর দুপুরে নন্দীগ্রামের বয়ালের সেই বুথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেতেই রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিস্থিতি। বুথের বাইরে কার্যত সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হলেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তারইমধ্যে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা। নালিশ ঠুকলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছেও।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার ভোটের সকাল থেকেই বয়ালে বিজেপির বিরুদ্ধে ছাপ্পাভোটের অভিযোগ উঠছিল। তৃণমূলের দাবি, বুথে শাসক দলের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে তৃণমূল এজেন্ট বাড়িতে ফিরে আসেন। বিজেপির ‘হুমকির’ জেরে ওই এজেন্টকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেননি স্ত্রী এবং মা। বৃদ্ধা তো হাতজোড় করে কেঁদেও ফেলেন। পরিবর্তে অন্য এক ব্যক্তিকে এজেন্ট হিসেবে নিয়ে যাওয়া হলেও কাগজপত্রে ত্রুটি দর্শিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে বসতে দেয়নি বলে অভিযোগ।
তারইমধ্যে দুপুর একটা নাগাদ রেয়াপাড়ার অস্থায়ী আস্তানা থেকে বয়ালের উদ্দেশে রওনা দেন মমতা। হুইলচেয়ারে বসেই বয়ালে শংকরবেতার গ্রামের সাত নম্বর বুথে আসেন। মমতাকে সামনে পেয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলকর্মী এবং স্থানীয়দের একাংশ। সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুথের ভিতরে যান মমতা। তারপরপই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মমতা বুথের ভিতর থাকাকালীন বুথের বাইরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর মদতে বহিরাগতরা বিজেপির হয়ে ছাপ্পা ভোট করছে। বিজেপির তরফে পালটা অভিযোগ করা হয়, বহিরাগতদের নিয়ে এসেছেন। কার্যত সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হন তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় র্যাফ নামানো হয়। আছেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। নিরাপত্তাজনিত কারণে মমতাকে বুথেই রাখা হয়। এক ঘণ্টারও বেশি বুথে আছেন তিনি।
সেখান থেকেই ধনখড়কে ফোন করেন মমতা। ছাপ্পা, বহিরাগত বিষয়ে নালিশ জানান। সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, ‘৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট হয়েছে। এখানকার মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। সকাল থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৬৩ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। একটাও পদক্ষেপ করা হয়নি। আদালতে যাব আমরা। আইনি পদক্ষেপ করা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে আধাসামরিক বাহিনী কাজ করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দোষ নেই।’
যদিও মমতার ছাপ্পা অভিযোগ পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ভোটে হেরে যাবেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়েছেন। আর লোকের মধ্যে অশান্তি ছড়িয়েছেন। ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোটের যে অভিযোগ তুলেছেন, তাও অবাস্তব। তৃণমূলের লোকেরাও এত পারবেন না।