দৈনিকসমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানকে হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডের খবর করতে যাওয়ার পথে গত ৫ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই সময়ে এই একইভাবে প্রথম সারির বেশ কিছু সাংবাদিকের গ্রেফতারের খবর বড় বড় সংবাদমাধ্যম গুলি তুলে ধরলেও সিদ্দিক কাপ্পানের মতো সাংবাদিকের কথা প্রকাশ্যে আসেনি। এই বিষয়ে টু-সর্কেল ডট নেট-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রেফতারির পর প্রায় এক মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কাপ্পানকে তাঁর পরিবার এবং আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলির পাশাপাশি বৃহত্তর নাগরিক সমাজের নীরবতা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
যদিও কেরাল ইউনিয়ন অব ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস (কেইউডাব্লুজে)-এর দিল্লি ইউনিটের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এই বিষয় নিয়ে সংস্থাটি বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শুধুমাত্র এই পদক্ষেপই কি যথেষ্ট?
কর্মরত একজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করার পাশাপশি এই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ যে মথুরা সিজেএম আদালতের দ্বারা এখনো পর্যন্ত কাপ্পানের পক্ষের আইনজীবীকে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়নি। সুপ্রিমকোর্টে এর আগে দায়ের করা আবেদনের সংশোধনীর তথ্য সংগ্রহের জন্য কেরালা ইউনিয়ন অব ওয়ার্কিং জার্নালিস্টসের পক্ষ থেকে নিয়োজিত আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস ১৬ অক্টোবর কাপ্পানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেষ্টা করেন। সে সময় তাকে একাধিকবার কখনো মথুরা সিজেএম আদালত, আবার কখনো মথুরার নতুন অস্থায়ী জেল যেখানে কাপ্পানকে রাখা হয়েছে, তার মধ্যে ঘোরাফেরা করতে হয়। কারণ অভিযুক্তের সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে দুপক্ষই একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপাতে থাকে। এর আগেও ৬ অক্টোবর যখন তা পানীয়ের আদালতে তোলা হয়েছিল সে সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার প্রচেষ্টা করেন আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস, কিন্তু সে সময়েও তাঁকে অভিযুক্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং জেলে গিয়ে সাক্ষাৎ করার নির্দেশ দেয় আদালত।
অভিযোগ, কাপ্পানের হয়ে আইনজীবী হিসেবে উইলস ম্যাথিউসকে আদালতে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ওকালতনামায় স্বাক্ষর পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি ওই সাংবাদিককে। শুধু তাই নয়, উত্তর প্রদেশ পুলিশের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত কাপপানের পরিবারকে তার গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো তথ্য বা এ সম্পর্কে কোনো রকম খবর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি কাপ্পানকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা যোগাযোগ করতে দেওয়ারও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ সম্পর্কে টু সার্কেল ডট নেটকে আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস বলেন, তার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন ঘটনা তিনি কখনো দেখেননি। এমনকি এমন ঘটনা ঘটার কথা ভাবাও অসম্ভব। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা সংবিধান বিরুদ্ধ এবং এই কারণেই আমরা নিম্ন আদালতে না গিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করি।
কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান বিগত ১০ বছর ধরে সাংবাদিকতার সূত্রে দিল্লিতেই বসবাস করছেন। একাধিক মালায়ালাম সংবাদমাধ্যমের হয়ে কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টের সম্পাদকের পদে রয়েছেন। তার পরিবারের আয় করার মতন মানুষ তিনি একাই। পরিবারে রয়েছেন তাঁর ৯০ বছরের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং তিনজন স্কুল পড়ুয়া সন্তান।
গত ৫ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, মালায়ালাম নিউজ পোর্টাল www.azhimukham.com-এর হয়ে হাথরাস কান্ডের খবর করতে যাওয়ার পথে সিদ্দিক কাপ্পানকে গ্রেফতার করে। সে সময় তার সাথে গাড়িতে করে যাওয়া আরো তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। টু সার্কেলস ডট নেটে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সিদ্দিক কাপপানের এই গ্রেফতারির খবর তার স্ত্রী রায়হান জানতে পারেন পরের দিন একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সাহায্যে। সিদ্দিক কাপ্পানের স্ত্রি টু সার্কেলস ডট নেটকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কোন রকম ভাবেই তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে তার মোবাইল বা ল্যান্ড লাইন নাম্বারে যোগাযোগ করতে না পেরে যথেষ্টই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তার কারণ তার স্বামী একজন ডায়াবেটিস রোগী। পরে কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট-এর পক্ষ থেকে সিদ্দিক কাপ্পানের স্ত্রীকে তাঁর গ্রেফতারির খবর জানানো হয়।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে এফআইআর দায়ের করার আগেই ৬ অক্টোবর কেরালা ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট এর পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্টে একটি হাবিয়াস করপাস পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। পরের দিন সকালে অর্থাৎ ৭ অক্টোবর খুব সকালে একটি এফআইআর দায়ের করা হয় সিদ্দিক কাপ্পানের বিরুদ্ধে। প্রাথমিকভাবে ওই এফআইআর-এ বলা হয় যে সিদ্দিক কাপপানকে হাথরাসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত করা এবং নিষেধাজ্ঞার আদেশকে উলঙ্ঘন করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পরে তার বিরুদ্ধে ইউএপি এর আওতায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার অভিযোগ দায়ের করা হয়।
১৮ অক্টোবর তাঁকে ৪ অক্টোবর দায়ের হওয়া একটি দাঙ্গা মামলায় অভিযুক্ত হিসেবেও দেখানো হয়। উল্লেখ্য, ৪ অক্টোবরের একদিন আগেই তিনি হাথরাসের উদ্দেশ্যে দিল্লি থেকে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। সিদ্দিক কাপ্পানের বিরুদ্ধে বর্তমানে আইপিসির বিভিন্ন ধারা সহ ইউএপিএ এবং আইটি অ্যাক্টেরও বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
কেইউডাব্লুজেজের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে গত ১২ অক্টোবর এই মামলার শুনানি হয়। তবে পুজোর ছুটির কারণে চার সপ্তাহের জন্য এই মামলার বিচার স্থগিত করা হয় এবং আবেদনকারীদের জামিনের জন্য এলাহাবাদ আদালতে যাওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে কেইউডব্লিউজে-র প্রতিনিধিত্বকারী বড়িষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিবাল শীর্ষ আদালতে দায়ের করা আবেদন পত্রে উত্তর প্রদেশ পুলিশের গ্রেপ্তারের ৪৮ ঘন্টা পরে এফআইআর দায়েরের বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি উত্তরপ্রদেশের যে কোনও আদালত থেকে জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার কথা বলেন, যার জন্য শীর্ষ আদালত আশ্বাস দেয় যে, তারা যে কোনও সময় প্রয়োজনে আপিল আদালতে যেতে পারবেন। শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে এফআইআর-এর বিবরণসহ একটি সংশোধিত আবেদন জমা দিতেও বলা হয়।
১৬ অক্টোবর, আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস এবং কেইউডাব্লুজের কয়েকজন আধিকারিকরা কারাগারে বন্দী অবস্থায় কাপ্পানের ওকালতনামায় স্বাক্ষর পাওয়ার জন্য এবং সংশোধিত জামিনের আবেদনটি আদালতে দাখিলের জন্য সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ এবং মথুরা সিজেএম আদালত উভয় স্থান থেকেই তার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করা হয় বলে টু সার্কেল ডট নেটের খবর।
এর ফলে আবেদনকারীরা ন্যায়বিচার পেতে আবারও শীর্ষ আদালতে যেতে বাধ্য হন। এদিকে, মথুরার মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট কাপ্পানকে ৫ অক্টোবর চার্জ করা ফৌজদারি কার্যবিধির বিভিন্ন ধারার অধীনে অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য এক লাখ টাকা জামিন হিসেবে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অপরদিকে, মথুরা মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নভেম্বর কপ্পান ও তার সাথে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে দুই দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৯ অক্টোবর কাপ্পানের জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত জামিনের আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২ নভেম্বর, কেইউডব্লিউজে আবারও আপিল আদালতে আবেদন করে পিটিশনটির কার্যপ্রণালী দ্রুত করার অনুরোধ করে।যেহেতু প্রাথমিক পিটিশনটি পুলিশের এফআইআর নিবন্ধের আগে জমা পড়েছিল, তাই সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকারীকে এফআইআর-এ উল্লিখিত অভিযোগসহ একটি সংশোধিত আবেদন পত্র জমা করার অনুমতি দেয়।
সিদ্দিক কাপ্পানকে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দেওয়ার অনুরোধের পাশাপাশি সংশোধিত আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের কাছে কেইউডাব্লুজে এবং তাদের আইনজীবীদের কাপ্পানের সাথে দেখা করতে দেওয়ার জন্য এবং তাকে ওকলতনামায় স্বাক্ষর করতে দেওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কাপপানির মায়ের স্বাস্থ্যের অবনতি কথা উল্লেখ করে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কাপ্পানকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ওই আবেদনপত্রে শীর্ষ আদালতের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে, যত শীঘ্র সম্ভব শীর্ষ আদালত মথুরার জেলা জজ বা একজন হাইকোর্টের বিচারককে তৎক্ষণাৎ নতুন মথুরা অস্থায়ী কারাগার, যেখানে কাপ্পানকে রাখা হয়েছে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্ত করতে এবং তাৎক্ষণিক সংশোধনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়।
১৬ অক্টোবর মথুরার ওই অস্থায়ী জেলে তাঁর সফরের পরে আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন এবং জামিনের আবেদনের পাশাপাশি এ সম্পর্কিত একটি হলফনামাও জমা দিয়েছিলেন।
সাংবাদিক হিসাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত কাপ্পানের বিচার নিশ্চিত করার জন্য কেইউডব্লিউজের দিল্লি ইউনিট সর্বাগ্রে রয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে কাপ্পানের তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবিতে দিল্লিতে বিক্ষোভ হয়েছে। এর পাশাপাশি কেরালার সমস্ত জেলা সদর ছাড়াও মুম্বই, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুতেও কাপ্পানের মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকরা বিক্ষোভ করেন। দি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ জার্নালিস্টস (এনএজে) এবং দিল্লি ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন। কপ্পানের অবিলম্বে মুক্তির বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকেও চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছে এনএজে।
গত মাসে কেরালা সফরের সময় সিদ্দিক কপ্পানের স্ত্রী রায়হানাথ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কাছে এই বিষয় সম্পর্কিত একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। তাঁকে সমর্থনের প্রস্তাব দিয়ে রাহুল গান্ধী আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তিনি এ বিষয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে উত্তরপ্রদেশে বিষয়টির অনুসন্ধান করতে বলবেন, তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আপডেট পাওয়া যায়নি।
কেরালার কয়েকজন সাংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে চিঠি লিখে কাপ্পানের অবিলম্বে মুক্তির জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের নেতারা কেরালায় কাপ্পানের পরিবারের সাথে দেখা করেছেন এবং সাংবাদিককে ন্যায়বিচারের জন্য তাদের সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টের পক্ষ থেকে কাপ্পানের ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লিখিতভাবে কোভিড -১৯ সংকটের সময়ে ভারতের পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
১৮ অক্টোবর ‘জার্নালিস্ট ফর ফ্রিডম’-এর সদস্যরা কাপ্পানের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিকের সাথে একাত্মতা ব্যক্ত করেছেন। সাংবাদিকদের সম্মিলিত একটি বিবৃতিতে কাপ্পানের গ্রেপ্তার ও আটক করে রাখার পেছনে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করে কাপ্পানের জন্য ন্যায় বিচার দাবি করা হয়। ওই সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ২২ শে অক্টোবর কালিকটে ‘সাংবাদিকতা অপরাধ নয়’ স্লোগান তুলে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিও আয়োজিত হয়, যার উদ্বোধন করেছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক এনপি চেককুট্টী।
তবে কেরালায় মূলধারার সাংবাদিক গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা লক্ষ করেছেন যে রাজ্যের গণমাধ্যমকর্মীরা অন্য একটি রাজ্যের সহকর্মীর দুঃখজনক দুর্দশার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাননি। কাপ্পানের স্ত্রী রায়হানাথ বলেন,গণমাধ্যমকে এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দেওয়া উচিত। এটা আজ কাপ্পানের সাথে হয়েছে, আগামীকাল এটা অন্য কারোর সাথে হতে পারে। গণমাধ্যম যদি এর বিরুদ্ধে কথা না বলে এবং প্রতিবাদ না করে তবে এই মনোভাব প্রত্যেককে প্রভাবিত করবে।
এদিকে, কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও সমালোচনা করে বলা হয়েছে গোটা বিষয়টি তার নজরে আসার পরও তিনি অন্য রাজ্যে ঘটা এই ঘটনা সম্পর্কে কোনরকম হস্তক্ষেপ করেননি। মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে রাজ্যের মানবাধিকার কর্মীদের, সিদ্দিক কাপপানের মুক্তির জন্য সংহতি কমিটির এবং কাপ্পানের স্ত্রী রায়হানাথের লেখা তিনটি চিঠি জমা দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রাজ্যে একজন শীর্ষস্থানীয় নেতাও তাদের সাথে দেখা করেননি।
তবে এখনো আশার আলো আছে বলে জানিয়ে টু সার্কেল ডট নেটকে আইনজীবী উইলস ম্যাথিউস বলেছেন, এখনও অবধি যা ঘটেছে তা আইনের শাসনের বিরুদ্ধে ছিল, তবে এখন এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে যা সংবিধানের অভিভাবক। আমরা আশাবাদী।
এই কঠিন সময়ে সন্তানদের সামনে নিজেকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখে স্বামীর ন্যায় বিচার সম্পর্কে আশা প্রকাশ করে কাপ্পানের স্ত্রী টু সার্কেলস ডট নেটকে বলেছেন, আমি আশাবাদী যে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার সাথে সাথেই মুক্তি পাবেন। আমি নিজে থেকে এখনও কোনও প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে যাইনি। আমি মনে করি এর প্রয়োজন হবে না এবং তাকে শীঘ্রই মুক্তি দেওয়া হবে।তবে তা না হলে আমি তাঁর মুক্তি জন্য যা যা করণীয়, তা করবো।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে টু সার্কেলস ডট নেটে প্রকাশিত খবরের একটি অনুবাদ মাত্র।