দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: শীতলকুচিতে ৪ জন নয় ৮ জনকে গুলি মারা উচিৎ ছিল, এমন বিতর্কিত মন্তব্য করে যেন আগুনে ঘি ঢাললেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। সোমবার হাবড়ার চোঙদা মোড় থেকে বাণীপুর পর্যন্ত রবিবার মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে মিছিল করেন রাহুল সিনহা। তার পর মিঠুন চলে যান। সন্ধ্যায় হাবড়া পুরসভা এলাকায় প্রচার করছিলেন হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহ। সেখানে শীতলকুচি-কাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাহুল।
দিলীপ ঘোষের পর এবার রাহুল সিনহা। শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে দিলীপ ঘোষকেও এবার ছাপিয়ে গেলেন হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা। দিলীপ যেখানে বলেছিলেন, ‘বাড়াবাড়ি করলে দিকেদিকে শীতলকুচি হবে’, সেখানে রাহুলের মন্তব্য, ‘শীতলকুচিতে চার জন নয়, আট জনকে গুলি করে মারা উচিৎ ছিল।’ আর কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী তা করেনি, তার জন্য বাহিনীকেই শোকজ করা উচিৎ বলে মত রাহুলের।
ভোটের প্রচার সেরে রবিবার রাতে রাহুলকে শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তখনই চরম বিতর্কে উসকে তিনি বলেন, ‘ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছেলেকে, শুধু বিজেপি করার অপরাধে যারা গুলি করে মারে, তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে বোম ছুড়ে মানুষকে ভোট দিতে আটকাচ্ছে, তাঁদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন মস্তানরাজ কায়েম করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছেন।’
এরপরই রাহুলের সংযোজন, ‘ঝামেলা পাকাতে এলে কী হতে পারে, তা তো শীতলকুচিতে দেখেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী উচিৎ জবাব দিয়েছে। আবার করলেও এই জবাব দেবে। শীতলকুচিতে ৪ জন নয়, ৮ জনকে গুলি করে মারা উচিৎ ছিল। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী চার জনকে মারল, তার জন্য বাহিনীকেই শোকজ করা উচিৎ।’
দিলীপ ঘোষের করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর প্রচার নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল। এমনকী দিলীপের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলার আবেদন করা হয়েছে। এমন সময় রাহুল সিনহার মন্তব্য সেই বিতর্কে আরও ঘি ঢালল। রাহুলের বিপক্ষে তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘রাহুল সিনহা পাগল হয়ে গেছেন। উনি ভোটে কখনও জেতেননি। এবার আরও রেকর্ড ব্যবধানে হারবেন। তাই পাগল হয়ে উনি যা তা বলছেন। নিজের চরম শত্রুকেও এভাবে মেরে ফেলার কথা বলা যায় না।’ তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়েই সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার একেই বলে। অবিলম্বে শীতলকুচির ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া উচিৎ।’