দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই শাসকদল তৃণমূলে প্রকট হচ্ছে ভাঙন! গত কয়েকমাসে একাধিক তৃণমূল বিধায়ক, মন্ত্রী নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। দল ভাঙনের খেলায় শাসকদল তৃণমূলকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষরা। তবে এবার পালটা চাল তৃণমূলেরও। আগামিকাল মঙ্গলবার বর্ধমানে পা রাখছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর আগে বর্ধমানে বড় ভাঙন ধরাল তৃণমূল। শতাধিকেরও বেশি কর্মী নিয়ে বিজেপি ছাড়লেন বিজেপি যুব মোর্চার এক প্রভাবশালী নেতা। গত কয়েকদিন আগেই বর্ধমান ঘুরে গিয়েছেন শাহ এবং কোং। ভোটের আগে একদা বাম দুর্গে নিজেদের পায়ের মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। এবার সেখানেই ফাটল ধরাল তৃণমূল।
কাজ করতে পারছি না! কাজ করার পরিবেশ নেই! গত কয়েকমাস ধরে এই সমস্ত কথার সঙ্গে পরিচিত বাংলার মানুষ। যে সমস্ত তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী কিংবা বিধায়ক দল ছেড়েছেন তাঁরা সবাই একই কথা বলেছেন। এবার সেই কথাই শোনা গেল বিজেপিত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে। বর্ধমানের অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিজেপির যুব মোর্চার নেতা গোপাল ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপিতে ছিলেন। আজ সোমবার তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু ও ব্লক সভাপতি প্রণব রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। আর দলবদলের পরেই বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন। এমনকি, দলে কাজ করার পরিবেশ নেই বলেও মন্তব্য করেন গোপাল। এদিন তাঁর সঙ্গেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে কালনা-২ ব্লকের বাদলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৩০০ পরিবার। ভোটের আগে ওই এলাকায় শক্তিবৃদ্ধি তৃণমূলের।
এখনও ক্ষমতায় আসেনি। আর তাঁর আগেই দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে বিজেপি। দলবদল করেই মারাত্মক অভিযোগ করেন গোপাল ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, বিজেপি গোটা দলটাই এখন নোংরামিতে ভরে গিয়েছে। বর্তমানে ওই দলে যা অবস্থা তাতে আর কোন ভাল মানুষ থাকতে পারে না বলে মনে করেন তিনি। আর তাই আগামিদিনে আরও নেতারা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন গোপালবাবু। তাঁর দাবি, বিজেপিতে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে কর্মযজ্ঞে শামিল হতে চেয়েছিলাম। সেই সুযোগ এসেছে। দিদির নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়ব, মন্তব্য গোপাল ভট্টাচার্যের। তবে গোষ্ঠী কোন্দলে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করেন গোপাল। তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে তিনটে গোষ্ঠী বিজেপির। আদি বনাম নব্যের লড়াই চলছে বলেও অভিযোগ তাঁর। বিজেপিতে কালনার বিধায়ক শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। গত কয়েকদিন আগেই এই দলবদল করেন তিনি। আর দলবদলের পরেই টেট নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। আর এরপরেই পালটা চাল দিল তৃণমূল। এলাকার অন্যতম বিজেপির প্রভাবশালী নেতাকে নিজের ঘরে তুলে নিল শাসকদল।
বর্ধমানে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। বর্ধমান পূর্বের বিধায়ক সুনীল মন্ডল ইতিমধ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বর্ধমান পশ্চিমে বিজেপির সাংসদ আলুওয়ালিয়া। একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রও বিজেপির দখলে। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কালনার বিধায়ক। যার পালটা হিসাবে এদিনের দলবদল। আর এরপরেই তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “কালনা বিজেপি শূন্য হয়ে যাবে। কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত ছাড়া কেউ বিজেপিতে থাকবে না।” যদিও ব্লকের বিজেপি নেতা সুভাষ পাল জানিয়েছেন, “ওই নেতাকে আগেই আমদের দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওর সঙ্গে ৩০০ কেন ৩টে লোকও নেই।”