দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : গরু পাচার কাণ্ডের অন্যতম পাণ্ডা মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী মহম্মদ এনামুল হককে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের সূত্র ধরেই এনামুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। বছর দুয়েক আগেও গরু পাচারের ঘটনায় একবার কেন্দ্রীয় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল এনামুলকে। তারপর জামিনে ছাড়া পেয়েছিল। সেপ্টেম্বর থেকে এই তদন্তে হঠাত্ই গা ঝাড়া দিয়ে নামে সিবিআই। এনামুলের সঙ্গে এই ঘটনায় আর এক ব্যবসায়ীর আনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, বিএসএফের আটক তালিকায় পাচারের সময়ে উদ্ধার হওয়া গরুর বর্ণনাতে কারচুপি করা হত। বড় গরুকেও ছোট মাপের ও ব্রিডের বলে দেখানো হতো। তার পর চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই সেগুলো নিলাম করে দেওয়া হত। সাইজে এই কারণেই ছোট দেখানো হতো যাতে নিলামের মূল দাম কম দেখানো যায়। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে কাস্টমসের দফতরের কর্তাদের যোগসাজসে সেগুলি নিলাম করা হতো। এনামুল, আনারুল ও গুলাম মুস্তাফারা নিলামে সেই গরুগুলো কম দামে কিনে নিত। এই কারণেই গরু পিছু ২ হাজার টাকা বিএসএফের একশ্রেণির অফিসারদের দিত তারা, একই ভাবে কাস্টমসের লোকজনকে পাঁচশ টাকা করে দিত।
সিবিআই যে এফআইআর করেছে তাতে মূল অভিযোগ করা হয়েছে বিএসএফের কমান্ডান্টের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহের ৩৬ নম্বর বাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ কুমার। ৩৬ নম্বর বাটালিয়নের অধীনে চার কোম্পানি জওয়ান মোতায়েন থাকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। সিবিআই জানিয়েছে, ওই সময়ে ২০ হাজারেরও বেশি গরু আটকেছিল বিএসএফ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, গরু আটকালেও খাতায়কলমে কোনও পাচারকারীকে গ্রেফতার বা আটক দেখানো হয়নি। কোনও গাড়িও আটক হয়নি। অর্থাৎ ব্যাপারটা এমনই যে গরুগুলি একা একাই যেন সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে চলে যাচ্ছিল।