দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: আমার অনুমতি ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার বেআইনি, বললেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সকালেই রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তবে সিবিআইয়ের এই গ্রেফতারিকে ‘বেআইনি’ কাজ বললেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যয়।
সোমবার সকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদ মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই। ওই খবরে রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার করার খবর পৌঁছয় অধ্যক্ষের কাছেও। ওই বিষয়ে বিমান বলেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। কারণ, কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। আদালত জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের কাছে এ বিষয়ে সিবিআই কিছু জানতেও চায়নি। কোনও চিঠিও দেয়নি।’’
বিমান খুব স্পষ্টই ভাষাতেই বলেছেন, ‘‘এই বিষয়ে অবশ্যই আমার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টে সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন।’’ বিধানসভার কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করতে হলে সংশ্লিষ্ট অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। যেমন লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের ক্ষেত্রে যথাক্রমে অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যানের অনুমতি নেওয়া হয়। বিমানের অভিযোগ, ‘‘মাসখানেক ধরে হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি চলছিল। আমাদের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে, আমরা তখন চিঠি দিয়ে নিজেদের মতামত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের কাছে কোনও রকম অনুমোদন বা অনুমতি চাওয়া হয়নি।”
সিবিআইয়ের পাশাপাশি অধ্যক্ষ অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধেও। তিনিই নারদা মামলায় অভিযুক্ত চার নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ছাড়পত্র দিয়েছেন সিবিআই-কে। বিমান বলেন, ‘‘হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে এক্ষেত্রে স্পিকারের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, রাজ্যপাল যখন চার্জশিট দেওয়ার অনুমোদন দিলেন, তখন স্পিকার ভেরি মাচ অন হিজ সিট। রাজ্যপাল যেদিন মামলার চার্জশিটে তাঁর অনুমোদন দিলেন। তখন কিন্তু আমি স্পিকার পদে কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছি। এমন নয় যে, তখন স্পিকারের চেয়ারটি খালি ছিল। আমি যখন স্পিকার পদে রয়েছি তখন এক্ষেত্রে আমার অনুমতি নেওয়া অবশ্যই উচিত ছিল। এই কাজটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি হয়েছে।’’ পেশায় আইনজীবী বিমান আরও বলেন, ‘‘আমি জানি না রাজ্যপাল কীসের উদ্দেশ্যে এই বিষয়ে অনুমোদন দিলেন! এ বিষয়ে উনি নিজের মাইন্ড কতটা অ্যাপ্লাই করেছেন, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।”