Wednesday, March 12, 2025
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

অসমে সরকারি মাদ্রাসা বন্ধের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা দলিত নেতাদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৈনিক সমাচার, কলকাতা:  অসমের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরকারি মাদ্রাসা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষাপ্রেমীদের মতে, এই ঘোষণা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যায় ফেলবে। আবার বিজেপি মন্ত্রীর এই মন্তব্য সংবিধান বিরোধী বলে সরব হয়েছেন দলিত নেতারা। বিশিষ্ট প্রবীণ দলিত নেতা ও লেখক সুকৃতিরঞ্জন বিশ্বাস জানান, “শিক্ষার অধিকার মৌলিক অধিকার। সংবিধান অধিকার দিয়েছে, সংখ্যালঘুরা নিজেদের পছন্দমত প্রতিষ্ঠান গড়তে পারবেন। ভোটের আগে মাদ্রাসা বন্ধের ঘোষণা আসলে রাজনৈতিক স্বার্থেই। মাদ্রাসা নিয়ে যত কথাই হোক, লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের অক্ষর জ্ঞানই হতনা যদি না মাদ্রাসা থাকতো। ফলে মাদ্রাসা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে মাদ্রাসা বন্ধ করার কথা না বলে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আরও আধুনিক করার প্রস্তাব আসতে পারে।”

জয় ভীম ইন্ডিয়া নেটওয়ার্কের সঞ্চালক শরদিন্দু উদ্দীপন বলেন,”সম্প্রতি আসামের প্রভাবশালী শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে, আসামের মাদ্রাসাগুলির জন্য সরকারী টাকা বরাদ্দ বন্ধ করা হবে। মাদ্রাসগুলিতে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় এই অজুহাত দেখিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে, জনগণের অর্থে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হবে না। মাদ্রাসা বোর্ড পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যে, সকল ধর্মের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সুযোগ থাকে এবং তা একটি জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামের অংশ এটি জানা সত্ত্বেও আসামের শিক্ষামন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত বিদ্বেষপূর্ণ এবং অসাংবিধানিক। আমরা ভারতের আদিবাসী-মূলনিবাসী সমাজ এবং জয় ভীম ইন্ডিয়া নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি সংবিধানের ৩০এ ধারা অনুযায়ী প্রত্যেকটি সংখ্যালঘু সমাজের শিক্ষাদান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করার অধিকার আছে। ভারতের সব থেকে উৎকর্ষ সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট জেভিয়ারস কলেজও সরকারী সাহায্য নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি চালায়। বিড়লাদের দ্বারা পরিচালিত জৈন সমাজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারী অনুদান পায়। শিখ সমাজের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি চলে সরকারী আনুকূল্যে। রামকৃষ্ণ মিশন সম্পূর্ণ ভাবে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তাঁর জন্য বরাদ্দ হয় কোটি কোটি টাকা। সংস্কৃত টোল ব্যবস্থাকে শিখণ্ডী বানিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করে দেবার এই ষড়যন্ত্র আসলে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর গোপন ষড়যন্ত্র। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করা হোক।”

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!