দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপি নেতাদের কথায় একুশের নির্বাচনে তারা আস্ফালন দেখিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের উপর মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন। গালিগালাজ করতেও ছাড়েননি। কিন্তু নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস সাফল্যের সঙ্গে সরকারে আসতেই তারা আতঙ্কে ঘর–বাড়ি ছেড়েছেন। আর বিজেপি নেতারা মুখে আশ্বাস দিলেও ফেরাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এমনকী এই নিয়ে বৈঠকেও বসেন তাঁরা। আর তারপরেই দেখা যায়, দলের জেলা (সদর) কার্যালয়ে কিছু কর্মী–সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপির দুই নেতা। তাঁদের ঘেরাও করেও রাখা হয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা এক মাসের উপরে ঘরছাড়া। তাদের বাড়ি ফেরানো, পরিবারের পাশে থাকা এবং খাবার দিতে ব্যর্থ হন বর্ধমান শহরের নেতারা। তাই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এই বিষয়ে জেলা সাংগঠনিক সহ–সভাপতি প্রবাল রায় বলেন, ‘এক মাস ধরে কর্মী–সমর্থকেরা ঘরছাড়া। নির্যাতন–অত্যাচার হয়েছে। সেই ক্ষোভের কথাই তারা আমাদের জানাচ্ছিল।’ বিজেপির অন্দরের খবর, এই ঘটনার পিছনে প্রাক্তন এক যুব নেতার হাত রয়েছে। তাঁর উস্কানিতে বর্ধমান দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী ও আহ্বায়ক কল্লোল নন্দনকে বৈঠক শেষে ঘেরাও করা হয়।
বিজেপি সূত্রে খবর, (বর্ধমান সদর) জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা অসুস্থ। তাঁর বদলে কার্যভার সামলাচ্ছেন সহ–সভাপতি প্রবালবাবু। তিনি বর্ধমানের ঘোরদৌড়চটির কার্যালয়ে ন’টি বিধানসভার প্রার্থী, আহ্বায়ক, সহ–আহ্বায়ক, মণ্ডল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন। ঘরছাড়াদের প্রকৃত অবস্থা জানতেই বৈঠক চলছিল। বৈঠকে থানা এলাকা ধরে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়। তারা ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরানো ও তাঁদের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।
বিজেপি সূত্রের দাবি, দলের কার্যালয়ে প্রায় ১৩০ জন ‘ঘরছাড়া’ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বর্ধমান শহরের বাসিন্দারাই ওই দুই নেতাকে ঘেরাও করেন। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই প্রায় ৩০ জন বিজেপি নেতা সন্দীপবাবু ও কল্লোলবাবুকে একটি ঘরে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। ভাঙা ঘর সারাতে আর্থিক সাহায্য, পরিবারগুলি যাতে খেতে পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। ওই দুই নেতা তাঁদের জানান, বাড়ি ফেরানোর জন্য তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরবেন বলে আশ্বাস দেন।