দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ঋণের টাকা সময় মত শোধ করতে না পেরে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পাশলা গ্রামে। মৃত ব্যক্তির নাম সুবোধ চন্দ্র মন্ডল (৫০)। তিনি পেশায় চাষি ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতেই নবগ্রাম থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকমাস ধরে প্রবল আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন মৃত সুবোধ মণ্ডল ও তার পরিবার। করোনা অতিমারীর কারণে রাজ্য জুড়ে আংশিক লকডাউনের ফলে বাড়িতে কর্মহীন হয়ে বসে আছে মৃতের একমাত্র ছেলে, সুদীপ মন্ডল। করোনা অতিমারী শুরু হওয়ার আগে রাজ্যের বাইরে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিল সুদীপ। মৃত সুবোধের কয়েক বিঘা চাষের জমি থাকলেও মূলত সুদীপের উপার্জনের উপর নির্ভর করে তাদের সংসার চলত। বছরখানেক আগে বাজার থেকে ধারদেনা করে পাশলা গ্রামে একটি পাকা তৈরী করেন সুবোধ।
সুবোধ মন্ডলের ভাইপো জয়ন্ত মন্ডল বলেন,”কাকা বছরখানেক আগে স্থানীয় একটি সিমেন্ট এবং লোহার দোকান থেকে ধারে কিছু মালপত্র নিয়ে গ্রামে একটি পাকা বাড়ি করেছিল। কিন্তু তারপর হটাৎই কোভিডের ধাক্কাতে তার আয় একদম বন্ধ হয়ে যায়। তার সাথে কাকার ছেলের চাকরিও চলে যায়। গত কয়েকমাস ধরে সুদীপ বাড়িতে বসে আছে।”
তিনি বলেন,”যে সমস্ত দোকান থেকে কাকা বাড়ি করবার জন্য মাল নিয়েছিল সম্প্রতি তারা টাকা শোধ করবার জন্য কাকাকে চাপ দিচ্ছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১১.৩০ নাগাদ কাকা খাওয়া দাওয়া করে বাড়ির চিলেকোঠার ঘরে গিয়ে হটাৎই দড়ি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে। কাকার বাড়িতে কোন অশান্তি ছিল না। কেবলমাত্র ঋণের টাকা শোধ করতে না পারার মানসিক অবসাদ থেকে উনি আত্মহত্যা করেছেন।”
আত্মহত্যার ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নবগ্রাম থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসে। শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।