দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ২১শে জুলাই। তৃণমূল কংগ্রেসের ‘শহিদ দিবস’। করোনা আবহে ধর্মতলার মেগা কর্মসূচি বন্ধ গত বছর থেকে। এবছর ও তৃণমূল নেত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন এই কর্মসূচি হবে “ভার্চুয়াল”। তবে প্রত্যেক বছর এই দিনটিতে রাজনৈতিক চমক দেন মমতা ব্যানার্জি। এ বছর ভোটে জিতে তৃতীয় বার সরকার গড়ার পর রাজনৈতিক মহলের নয়া জল্পনা, কী চমক থাকছে? চমকটি সত্যি হলে তা নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। সর্বভারতীয় স্তরে এর মধ্যেই খবর ঘুরছে “বিহারী বাবু” প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ, অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। ভোটের ঠিক আগেই শত্রুঘ্ন সিনহার আরেক সতীর্থ, বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী যশবন্ত সিনহা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তৃণমূলের অন্যতম জাতীয় সহ সম্পাদক তিনি। অতীতে দিল্লিতে মমতার সঙ্গে দেখা করাই শুধু নয়, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় ব্রিগেডে যে বিজেপি বিরোধী সমাবেশ হয়েছিল সেখানেও হাজির ছিলেন শত্রুঘ্ন। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে শত্রুঘ্ন তাঁদের জানান, ‘সম্ভাবনার আর এক নাম রাজনীতি’।
এই প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে না চাইলেও তৃণমূলের দুই রাজ্যসভা সাংসদ জানান, দীর্ঘদিন ধরেই মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে ভাল সম্পর্ক শত্রুঘ্ন সিনহার। ২১’ এর ভোটের পরেও তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে একাধিক বার ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়েও কথা এগিয়েছে অনেকটাই। দল ও চাইছে সর্বভারতীয় স্তরে ধারে ও ভারে বাড়তে। কারণ এখন টার্গেট ২০২৪ লোকসভা ভোট। নরেন্দ্র মোদীর মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে তৃণমূল নেত্রী এই মুহূর্তে সব থেকে ভরসাযোগ্য নাম বলে মনে করছেন অনেকেই।
প্রসঙ্গত, পাটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে ২ বারের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। আটের দশক থেকে বিজেপি করেছেন তিনি। তবে বাজপেয়ী–আডবানি মন্ত্রিসভায় থাকলেও মোদী–শাহের আমলে গুরুত্ব পাননি তেমন। বিজেপি ছেড়ে ২০১৯ লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের হয়ে নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকে হেরে যান। কংগ্রেস ও তাঁকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় তৃণমূলের দু’টি আসন ফাঁকা রয়েছে। একটি ভোটের আগে দীনেশ ত্রিবেদী পদত্যাগ করার কারণে আর অন্যটি ছেড়ে মানস ভূঁইঞা ভোটে দাঁড়িয়ে এখন রাজ্যের মন্ত্রী। ফলে একদিকে যেমন সংসদের উচ্চ কক্ষে যাওয়ার হাতছানি রয়েছে এই প্রাক্তন সাংসদ-অভিনেতার ক্ষেত্রে, অন্যদিকে সামনে উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি বিধানসভা ভোট রয়েছে যেখানে, অন্তত কিছু আসনে প্রার্থী দিতে চায় তৃণমূল। সেক্ষেত্রে সর্বভারতীয় পরিচিতি আছে এমন মুখের দরকার রয়েছে তাদেরও। তাই আপাতত জোর জল্পনা শত্রুঘ্ন সিনহাকে ঘিরে।