Wednesday, February 5, 2025
Latest Newsইতিহাসফিচার নিউজ

গালওয়ান উপত্যকার আবিস্কর্তা ভারতের গুলাম রসুল গালওয়ান! চিন তা দাবি করে কিভাবে?

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : লাদাখের গালওয়ান উপত্যাকার নামটা এখন সারা দুনিয়াতেই খুব চেনা, কারণ এটাই এখন ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাতের সর্বশেষ ফ্ল্যাশপয়েন্ট।

স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে দুদেশের কাছেই অতি গুরুত্বপূর্ণ এই উপত্যকা। তবে অনেকেরই হয়তো জানা নেই, সোয়াশো বছর আগে এর নামকরণ করা হয়েছিল লাদাখেরই এক কিংবদন্তী পর্বতারোহী ও অভিযাত্রী গুলাম রসুল গালওয়ানের নামে।

১৮৭৮ সালে তিব্বতের ইয়ারকান্দে এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুলাম রসুল গালওয়ান। বর্তমানে ওই এলাকা চিনের স্বশাসিত এলাকা উইঘুরের জিনজিয়াং এলাকায় পড়ে। তাঁর বাবার কোনও পরিচয় পাওয়া যায় না। সম্ভবত মায়ের সঙ্গেই থাকতেন গুলাম রুসুল গালওয়ান। দীন দরিদ্র পরিবার। অভিযাত্রীদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়াকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন গালওয়ান। তাও খুব ছোট্ট বয়সে।

সমুদ্রপূষ্ট থেকে পাঁচ হাজার বা সাত হাজার মিটার উচ্চতায় অবস্থিত গালওয়ান উপত্যকা। শীতের তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে। কারাকোরাম উপত্যকার ভয়ঙ্কর সেই এলাকা ছিল গালওয়ানের হাতের তালুর মতই চেনা। লাদাখি মুসলিম অভিযাত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন সাহেবদের অত্যন্ত প্রিয়।

দারিদ্রতাই তাঁকে ঠেলে দিয়েছিল অভিযাত্রী জলের মালবাহক হতে। সেই সময়ই অনেক পর্বত আরোহী দলের আকর্ষণ ছিল তিব্বত, ইয়ারকাণ্ড, কারাকোরাম পামির মালভূমি বা মধ্য এশিয়া অভিযান। সেই সব দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেন ছোট্ট গালওয়ান। স্যার ফ্রান্নিস ইয়ং হাসব্যান্ডের দলের সঙ্গে সাধারণ মালবাহক হিসেবেই অভিযাত্রী জীবন শুরু করেছিলেন গালওয়ান।

১৮৯২ সালে চার্লস মারের সঙ্গে পামীর আর কাশগার পর্বত অভিযানই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। সেই দলটি লাদাখের গিরিখাতের মাঝখানে আটকে গিয়েছিল। কিন্তু ছোট্ট গালওয়ানই তাঁদের সহজ পথ দেখিয়ে দেন, যাতে চক্রবুহ্য থেকে বার হওয়া অনেক সহজ হয়ে যায় সাহেবদের কাছে। তারপরই অভিযাত্রী দলটি খুশি হয়ে উপত্যকার নাম রাখেন গালওয়ান উপত্যকা।

হিমালয়ান জার্নালের দীর্ঘদিনের সম্পাদক হরিশ কাপাডিয়ার কথায়, ‛ব্রিটিশ অভিযাত্রীদের নামে নামকরণ করাটাই তখন ছিল দস্তুর – গালওয়ান উপত্যকা ছাড়া আর কোথাও কোনও নেটিভের কপালে এই সম্মান জুটেছে এমন একটি দৃষ্টান্তও আমার জানা নেই।’

লাদাখের ঐতিহাসিক আবদুল ঘানির কথায় তৎকালীন ব্রিটিশ অভিযাত্রীদের সঙ্গে রীতমত ওঠাবসা ছিল গালওয়ানের। কাশ্মীর আর তিবব্বত ভূগোল সম্পর্কে অসামান্য জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন গুলাম রসুল গালওয়ান। ১২ বছর বয়স থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর অভিযাত্রী জীবন। বিশ্বের বৃহত্তম চূড়া গডউইন অস্টিন কে ২ উচ্চতা নির্ধারণকারী মেজর এইচ এইচ গডউইন অস্টিনের দলের সদস্যও হয়েছিলেন গালওয়ান।

 

আরও খবরাখবর পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রূপে

Leave a Reply

error: Content is protected !!