দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিতর্কের শিরোনামে উত্তরপ্রদেশ। যোগীরাজ্যে একের পর দলিত নিগ্রহ ঘটনা সামনে আসছে। কখনও ধর্ষণ, কখনও হত্যা, আবার কখনও শ্রেণী বৈষম্যের ঘটনা নিত্যদিনের হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এবার হাথরস কাণ্ড নিয়ে শ্রেণী বৈষম্যের প্রশ্ন তুলে দিল খোদ এলাহাবাদ হাইকোর্ট। গরিব দলিত পরিবারের ছিলেন বলেই নির্যাতিতার শেষকৃত্য এভাবে হয়েছে, সেকথাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিল আদালত। হাথরস কাণ্ডে পুলিশের পদক্ষেপ বিচার করে দেখছে উত্তরপ্রদেশ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ।
নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে মামলা লড়ছেন সীমা কুশওয়াহা। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট রীতিমতো তোপ দেগছে পুলিশকে। ‘সোমবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালত জিজ্ঞেস করেছে, ‘নির্যাতিতা যদি ধনী পরিবারের মেয়ে হতেন, কী করতেন? এভাবেই দাহ করতে পারতেন?’ অন্য পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রবীণ কুমারকেও সমন পাঠিয়েছিল আদালত। কুমার আদালতে মাঝরাতে এভাবে তরুণীর দাহ করানোর দায় স্বীকার করে নিয়েছেন।
নির্যাতিতার মৃত্যুর পর রাত আড়াইটার সময় দেহ পুড়িয়ে দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরিবারকে আটকে রাখে বাড়িতে। শেষবার মেয়েকে তাঁদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার আর্জিও মানেনি পুলিশ। এই নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পুলিশ দাবি করে, পরের দিন সকালে দাহ করলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হত। গোয়েন্দা মারফত আগাম খবর পেয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
১ অক্টোবর স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে মামলাটি নিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। জানিয়েছিল, এই ঘটনায় শুধু নির্যাতিতা নয়, তাঁর পরিবারেরও মানবাধিকার এবং প্রাথমিক অধিকার খর্ব হয়েছে। তাই মামলাটি নাগরিকদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। হাইকোর্ট ১৯৯৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার উল্লেখ করেছিল। বলেছিল, এই ধারা নাগরিকদের ‘বাঁচার অধিকার’, ‘মর্যাদার অধিকার’ দেয়। সেই ধারা মেনে মৃতদেহের সম্মান করা বাঞ্ছনীয়। ২ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।