দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : আজ বিনয়ক দামোদর সাভারকরের জন্মবার্ষিকী। অনেকেই তাকে ‘বীর’ সাভারকর নামে সম্মান জানান। প্রশ্ন হচ্ছে সত্যিই কি তিনি বীর? তার বিরত্ব নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকে গিয়েছে ইতিহাসবিদদের একাংশের কাছে।
লন্ডনে থাকাকালীন সাভারকর ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন। জ্যাকসন হত্যায় জড়িতদের অন্যতম ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে লর্ড কার্জন হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগও ছিল। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং বিস্ফোরক ব্যবহারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে।
তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী একাধিক কাজ কর্মে জড়িয়ে ইংরেজদের হাতে ধরা পড়েছিলেন। ১৯১১ সালে তাঁকে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। সেখানে বন্দি অবস্থায় ১৯১১ সালে, ব্রিটিশ সরকারের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রথম চিঠি লেখেন সাভারকর।
সেই চিঠিতে তিনি বলেন, এমন কোনও কাজ আর তিনি করবেন না। তাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। সে চিঠি গ্রাহ্য হয়নি। ১৯১৩ সালে তিনি ফের চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি ব্রিটিশ সরকারকে জানান, ‘তিনি নেহাতই আবেগের বশে ইংরেজদের বিরোধিতা করেছিলেন, আসলে তিনি একান্তভাবেই ইংরেজ সরকারের একনিষ্ঠ ভক্ত ও সমর্থক’।
এবারও কোনও ফল হয়নি। ১৯২০ সালে আবার চিঠি লেখেন সাভারকর। এই নিয়ে চতুর্থবার। যেখানে তিনি লেখেন, ‘ভারতবর্ষের সুরক্ষার জন্যই ভারতের ব্রিটিশদের অধীনে থাকা উচিত, এবং তিনি ও তার ভাই কথা দিচ্ছেন যে তাঁরা আর কোনওদিন সরকারবিরোধী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবেন না।’
সাভারকার কথা রেখেছিলেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। ঐতিহাসিকদের থেকে জানা যায়, ১৯৪১ সালে বিশ্বযুদ্ধের আবহাওয়ায় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু যখন আজাদ হিন্দ বাহিনী তৈরি করছেন, তখন সাভারকর তার অনুগামীদের পরামর্শ দেন যে , এই মুহূর্তে বাংলা ও আসামের হিন্দুদের উচিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে নাম লেখানো।
এমন আনুগত্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কমান্ডার সাভারকরের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছিলেন। এমন আরও ঘটনার প্রমাণ মেলে তাঁর বিরুদ্ধে। আর ঠিক এই কারনেই ইতিহাসবিদরা সাভারকরকে ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের অন্যতম চরিত্র বললেও ‘বীর’ উপাধিতে তাঁদের মতবিরোধ রয়েছে।
আরও খবরাখবর পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রূপে