দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : মোদীর জমানায় দেশের মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা অনেকটাই কমে গেছে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে, প্রশ্ন করলে পুলিশ লাগিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করার অপরাধে গভীর রাতে সাংবাদিকতার এক পড়ুয়াকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়ে লক আপে ১২ ঘন্টা আটকে রাখে বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৫ আগষ্ট রাত দু’টোর সময় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সাংবাদিকতার পড়ুয়া মিসবাহ জাফরকে আরএসএস সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করার অপরাধে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় থানায়। তারপর তাকে থানার লকআপে ১২ ঘন্টা আটকে রাখে।
হায়দরাবাদের মাওলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী মিসবাহ, ১৪ আগস্ট ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস ফেসবুক লাইভ ইভেন্টের একটি পোস্ট ট্যাগ ও শেয়ার করেছিলেন। পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে মিসবাহ সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ আগষ্ট গভীর রাতে থানার এসআই সহ পুলিশের একটি দল আমার বাড়িতে উপস্থিত হয়। তারা দরজা ধাক্কা দিতে থাকে। খুলে দিলে আমাকে আটক করে। কেন আটক ? পরিবারকে অবহিত না করেই তারা আমাকে তখনই জারওয়াল থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ অফিসাররা তাকে প্রশ্ন করে, “তুই কি এখন আরএসএসের কাছ থেকে আজাদি চাস? পরে ভারত থেকে আজাদি চাইবি? তুই এখানে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করছিস? খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়ার জন্য তোকে তো ভারত সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। তুই কি ইমরান খানের আইন ভারতে প্রয়োগ করতে চাস?” মিসবাহ জানান, “আমাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়, নাগাড়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে অপমানজনক কথা এবং গালিগালাজ দেওয়া হতে থাকে।” মিসবাহের বাবা এবং বড় ভাই, সকালে থানায় গেলে তাদের আবার বিকেলে আসতে বলা হয়। তারা চলে গেলে, মিসবাহকে স্ট্যাটাস পোস্ট করার জন্য একটি মাফিনামা (ক্ষমা প্রার্থনা পত্র) লিখতে বাধ্য করা হয়। মিসবাহ জানান, “থানার ওসি আমাকেকে হুমকি দেয় যে, আমি যদি তা মেনে না নিই, তবে তারা আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ১৯৬ ধারা দায়ের করবে। সরকার আমার বাবার সম্পত্তিও নিয়ে নেবে।”
ওসি হুমকি দেয়, “আমি যা বলছি তা লেখ, তারপর স্বাক্ষর কর।” “আমার পরিবার থানায় এলে তাদের আবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।” বলেন মিসবাহ। তিনি আরও বলেন, মাফিনামা লিখে দিলে আমাকে বেলা তিনটায় মুক্তি দেয় থানার ওসি। একটি চালান ফর্মেও স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে মিসবাহের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে যোগীর পুলিশ স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে। নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আরএসএস কর্তাদের দাসত্ব প্রমাণ করছে পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি এবং উস্কানিমূলক পোস্ট করার জন্য তাকে গ্ৰেফতার করা হয়েছিল।