দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ভুয়ো টিকাকরণ নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি তখন, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার অনতিপরেই পরেই মৃত্যু হল এক অশীতিপর বৃদ্ধের। টিকাগ্রহণ থেকেই এই মৃত্যু কি না তা নিয়ে রীতিমতো গভীর সংশয় দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, কুমারগঞ্জের ওই মৃত ব্যক্তির নাম হৃষিকেশ সরকার।
মৃতের পরিবার জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে সস্ত্রীক কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নেন হৃষিকেশবাবু। টিকা নেওয়ার কিছু পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর প্রাথমিক শুশ্রূষা করে বাড়়ি পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার আগেই রাস্তায় ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন হৃষিকেশবাবু। সঙ্গে সঙ্গেই ফের তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, টিকা নেওয়ার আগে পর্যন্ত সুস্থই ছিলেন হৃষিকেশবাবু। করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর সোমবার তাঁর দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার কথা ছিল। প্রথমবারের মতো এ বারেও কোভিশিল্ডই নিয়েছিলেন হৃষিকেশ। কিন্তু তারপরেই এই বিপত্তি। মৃতের প্রতিবেশী কৃষ্ণ কুণ্ডু জানিয়েছেন, হৃষিকেশের স্ত্রীও কোভিশিল্ড নিয়েছেন। কিন্ত, তা নিয়ে সুস্থ আছেন। তাঁর কোনও সমস্যা হয়নি। তাহলে হৃষিকেশের কেন এমন হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কৃষ্ণবাবু। হৃষিকেশবাবুর ছেলে আনন্দ সরকারের কথায়, “টিকা নেওয়ার পরেই বাবার অসুস্থতা শুরু হয়। তার আগে তো সব ঠিক ছিল। টিকায় জাল না থাকলে কি এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্ভব? এমনিতেও যেভাবে টিকা জাল হচ্ছে তাতে তো আর কোনওকিছুই অসম্ভব মনে হচ্ছে না। আমরা এই ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবি করছি।”
ঘটনায়, কুমারগঞ্জের ব্লক মেডিক্যাল আধিকারিক সৌমিত্র সাহার কথায়, “হাইপারটেনশনের রোগী ছিলেন হৃষিকেশবাবু। টিকা নেওয়ার পর তিনি অসুস্থবোধ করেন। সাধারণত টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্বাসকষ্ট, চুলকানি ইত্যাদি দেখা যায়। সেসব কোনও উপসর্গই দেখা যায়নি ওঁর। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকদের অনুমান, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টেই মৃত্যু হয়েছে হৃষিকেশবাবুর। তবে, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন টিকা নেওয়ার পরেই মৃত্যু হল হৃষিকেশবাবুর তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খোদ জেলাশাসক আয়েশা রানি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
উল্লেখ্য, কসবায় ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে জাল টিকা নেন খোদ তৃণমূল শাসক মিমি চক্রবর্তী। কোভিশিল্ডের বদলে অ্যামিকেসিন টিকা হিসেবে পান তিনি। তারপরেই তাঁর কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকদের অনুমান, ভুয়ো টিকার জেরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী সাংসদ। জাল টিকাকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব ও তাঁর তিন সহকারীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।