রাজেন্দ্র নাথ দত্ত, দৈনিক সমাচার, মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের ছাত্র বিভাবসু মন্ডল রাজ্যের মধ্যে মাধ্যমিকে পঞ্চম স্থান অধিকারের পাশাপাশি জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করল। সারা বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম। রাত জেগে পড়াশোনা। বারবার একই পড়া অভ্যাস করা। কড়া রুটিনের মাঝেই বেজে গিয়েছিল পরীক্ষার ঘণ্টা। পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। তারপর দেশজুড়ে শুরু অদৃশ্য ভাইরাসের তাণ্ডব। তাই ফলপ্রকাশের জন্য রাজ্যের সমস্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মতো মেধাতালিকায় পঞ্চম বিভাবসু মন্ডলকেও একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হয়। অসাধারণ ফল হবে, সে বিষয়ে কিছুটা হলেও নিশ্চিত ছিল ওই স্কুলছাত্র। তবে মেধাতালিকার পঞ্চমে নিজের নাম শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারল না বিভাবসু।
ছোট থেকে গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইনস্টিটিউটের বেশ মেধাবি ছাত্র সে। রেসাল্টে যেমন প্রতি বছরই রেকর্ড গড়ত তেমনই উপস্থিতির হারেও। কোনওদিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকত না সে। তবে নেহাত স্কুলের প্রতি টান থেকে যে সেএমন করত তা নয়। স্পষ্ট ভাষায় মেধাবি বিভাবসুর উত্তর, গৃহ শিক্ষক ছিল না, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে সমস্ত কিছু দেখিয়ে নিতাম, আজ তাঁদের সাহায্যের ফল পেয়েছি। ছোট থেকে বাবা ও মায়ের সঙ্গেই তার বেশি সখ্যতা। মাধ্যমিকের আগেও পড়াশোনা দেখিয়ে দিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা। স্কুলের কোচিং ক্লাসেও যেত। নিজে বাড়িতে সারাদিনে মাত্র ৭-৮ ঘন্টা পড়াশোনা করত। কঠিন পরিশ্রমেরই যেন ফল মিলল।
যখন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আনুষ্ঠানিকভাবে মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ করছিলেন তখন তাঁর উৎসাহী দু’টি চোখ ছিল টিভির পর্দায়। মেধাতালিকার পঞ্চমে ছেলের নাম শুনে আনন্দে ফেটে পড়েন বাবা-মা। তবে বিভাবসু মন্ডল প্রথমে বুঝতে পারেনি তার নিজের কথা বলছেন পর্ষদ সভাপতি। পরে বুঝতে পারে সে। সাফল্যের আনন্দে চোখে জল চলে আসে তার। বেশ কিছুক্ষণ টিভির সামনে বসে কান্নাকাটিও করে। আপাতত অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছে সফল ছাত্র। গবেষক হয়ে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন দেখছে বিভাবসু।স্কুলের শিক্ষক এবং বাড়িতে বাবা বাবুল কুমার মণ্ডল ও মা বিউটি মণ্ডল তাকে পড়াশোনায় সাহায্য করতেন।
তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম আমাদের বিদ্যালয় মাধ্যমিকে রাজ্যে স্থান দখল করলো এটা গর্বের বিষয়। এর কৃতিত্ব বিভাবসু ও আমাদের বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষকদের তাদের প্রচেষ্টা আর বিভাবসুর মেধা আজ সাফল্য এনে দিয়েছে।
আরও খবরাখবর পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রূপে