দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ত্রিপুরায় কাজ করতে গিয়ে হেনস্তার মুখে পড়েছে তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম – আই প্যাকের সদস্যরা। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই ঘটনায় নিন্দায় মুখর তৃণমূল। এবার টিম পিকে’র পাশে দাঁড়িয়ে বিপ্লব দেব সরকারের তীব্র নিন্দায় সরব হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা মানিক সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ”হারের ভয়ে বিজেপি সরকারের এই কাজের তীব্র নিন্দা করছি। এটা কোন ধরনের সরকার? একটা দল সমীক্ষা করতে এসেছে, তাদের আটকে রাখা হল কেন?” যদিও মঙ্গলবার রাতে আই প্যাকের ২৩ সদস্যের প্রত্যেকের উপর থেকে নজরদারি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আপাতত সকলের RTPCR রিপোর্ট নেগেটিভ। তাঁরা আগরতলার হোটেলেই রয়েছেন। আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আগরতলা যান তৃণমূলের ৩ প্রতিনিধি।
রবিবার রাতে ত্রিপুরায় পা রাখার পরই হেনস্তার শিকার হন পিকের আই প্যাক টিমের ২৩ সদস্য। আগরতলার যে হোটেলে তাঁরা উঠেছেন, সেখানে গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ, পরেরদিন হোটেল থেকে বেরতে না দেওয়া, নজরবন্দি করে রাখার মতো বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। খবর পেয়েই টুইটে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার বিজেপি সরকার ভয় পেয়েই তৃণমূলের ভোটকুশলীর টিমকে এভাবে হেনস্তা করছে, এই অভিযোগ ছিল তাঁর। এবার অভিষেকের সুরেই সুর মেলাতে শোনা গেল ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে। আই প্যাকের সদস্যদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে বিস্মিত, ব্যথিত তিনি। হারের ভয়েই বিজেপির এই কাজ বলে মনে করছেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা। আর মঙ্গলবার তাঁর এই মন্তব্যে তৃণমূল-সিপিএম সখ্যের জল্পনা আরও উসকে উঠল। সদ্যই বাংলার সিপিএম নেতৃত্ব বিজেপি বিরোধী যে কোনও দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজনীতির পথ চলায় সায় দিয়েছে। এবার মানিক সরকারের মুখে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির নিন্দা কি সেই সমীকরণেই সিলমোহর দিল? প্রশ্ন উঠছেই।
এদিকে, আই প্যাকের টিমের সঙ্গে দেখা করতে বুধবার সকালে ত্রিপুরায় রওনা হলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং দলের অন্যতম সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে ব্রাত্য বসু বলেন, ”অভিষেকের আগরতলা যাওয়ার কথা। I-Pacকে ওখানে আটকে রেখেছে। বিজেপি গণতন্ত্রকে ভুলুন্ঠিত করছে। ত্রিপুরায় বিজেপিকে লড়ার জন্য তৃণমূল শক্তি আছে, বামেদের এই বোধোদয় যত দ্রুত হয় ভাল। আমরা I-Pac’এর ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। গণতান্ত্রিক দেশে যদি একজন আরেকজনের সঙ্গে দেখা করতে না পারে, তাহলে তা সাংঘাতিক।” ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”গণতান্ত্রিক দেশে সেখানে মগের মুলুকের মত আচরণ হচ্ছে। আমরা I-Pac’এর সঙ্গে দেখা করার আপ্রাণ চেষ্টা করব।”