দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালে যতবারই মন কি বাত এর মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছে ততবারই চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভিডিওকে কোটি কোটি ডিসলাইকের বন্যা বয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশবাসীর মন ছুঁতে মাসিক একটি রেডিও প্রোগ্রাম নিয়ে হাজির হতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। নাগরিকত্ব আইন বিতর্ক হোক বা তিন তালাক, এমনকী কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও এই মন কি বাত অনুষ্ঠানেই সরব হয়েছে মোদী। কিন্তু চলতি বছর এই ‘মন কি বাত’ নিয়েই চূড়ান্ত বেকায়দায় পড়তে দেখা গিয়েছে খোদ মোদীকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কৃষিন বাতিলের দাবিতে দেশজোড়া কৃষি আন্দোলনের মাঝেই ২৭ ডিসেম্বর রবিবার ২০২০ সালের শেষ মন কি বাত নিয়ে হাজির হন মোদী। যদিও এই ধারা চলছে অনেক আগে থেকেই। ‘মাইগভ’, ‘নমো অ্যাপের’ পাশাপাশি পিআইবি, বিজেপি-র অফিসয়াল ইউটিউব পেজ থেকেও সরাসরি চলে সম্প্রচার। এই সমস্ত মাধ্যমেই দেশবাসীর অভাব অভিযোগ জানাতে সরাসরি আবেদন জানাতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।
এদিকে বিজ্ঞাপনী প্রচার হোক বা জনমানসে গ্রহণযোগ্যতা, প্রতি ক্ষেত্রেই জনসংযোগ বাড়াতে বরাবরই মন কি বাত-কে ঢাল করতে দেখা গিয়ছে মোদীকে। তাই ক্ষমতায় আসর পর থেকেই প্রত্যেক মাসের একটি রবিবার একটি করে মন কি বাতের অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির হয়েছেন মোদী। কিন্তু অগাস্টেই এই অনুষ্ঠানের কারণেই বড়সড় ধাক্কা খান মোদী। পিআইবি হোক বা বিপির ইউটিউব চ্যানেল , প্রতিক্ষেত্রেই মোদীর মন কি বাতের নতুন পুরনো সমস্ত এপিসোডে বয়ে যায় ডিসলাইকের বন্যা।
তবে আসল ঘটনার সূত্রপাত প্রধানমন্ত্রীর ৬৮তম ‘মন কি বাতের’ অনুষ্ঠান ঘিরেই। এই অনুষ্ঠান থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতির একধিক বিষয়ে বিশদে আলোকপাত করতে দেখা যায় মোদীকে। এদিকে সেই সময় জয়েন্ট পরীক্ষা নিয়ে গোটা দেশজুড়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। করোনা আবহে নিট ও জেইই নিয়ে প্রবল সঙ্কটের মুখে পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু ওই মন কি বাতের অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গে একটিও শব্দ খরচ করেননি মোদী। আর তার জেরেই নেটিজেনমহলের তীব্র রোষানলে পড়েন খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী।
এমনকী প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুরু আগেই আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয় #Mann_Ki_Nahi_Student_Ki_Baat. করোনা আবহে নিট-জেইই নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই মূল ট্রেন্ড চলতে থাকে নেটপাড়ায়। যাতে সুর মেলাতে দেখা যায় বিরোধী শিবিরের অন্যতম প্রধান মুখ তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও। মোদীর ‘চা পে চর্চাকে’ ঢাল করে ‘পরীক্ষা পে চর্চার’ দাবি তুলে আসরে নামে কংগ্রেস। সরব হন অনেক সাধারণ মানুষও।
শুধু ৬৮তম মন কি বাতের অনুষ্ঠান নয় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে আগের সমস্ত অনুষ্ঠানেও। বিরোধী সহ আম-আদমি প্রত্যেকেরই দাবি করোনা আবহে এত বড় পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে সরকার। ডিসলাইকের বন্য দেখা যায় পিআইবি, বিজেপির তরফে আপলোড করা মন কি বাতের সমস্ত পুরনো ভিডিওতেও। এমনকী বিজেপির তরফে আপলোড করা কোনও ভিডিও ২৪ ঘন্টার মধ্যে সর্বোচ্চ ডিসলাইক পাওয়ার নিরিখে ভেঙে যায় পুরনো সমস্ত রেকর্ডও।