দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিরিখে ১৮০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস’। সম্প্রতি প্রকাশিত সেই তালিকায় (প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স) ১৪২তম স্থান অর্জন করেছে ভারত। প্রশ্ন উঠেছে, ১৮০টি দেশের মধ্যে স্বাধীনতার নিরিখে এ দেশের গণমাধ্যমের স্থান ১৪২ কেন?
গত বছরের অগস্টে কাশ্মীর থেকে অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গোটা কাশ্মীর জুড়ে জারি করা হয় এক অনির্দিষ্টকালীন ও অলিখিত লকডাউন। এর দারুণ প্রভাব পড়ে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও। কঠিন হয়ে দাঁড়ায় সেখানকার খবর সারা দেশে স্বাধীন ভাবে প্রকাশ করা। দেশের এই দুই ধাপ পিছিয়ে পড়ার পিছনে সেই পর্বের যে বিশেষ ভূমিকা আছে, তা ‘রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস’-এর এই রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে বিগত কয়েকবছরের পরিসংখ্যানে, যা খুবই চাঞ্চল্যকর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে মুসলিম সাংবাদিকদের বেছে বেছে টার্গেট করে তাঁদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, কাশ্মীরে একজন সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। কাশ্মীরের চিত্রসাংবাদিক মাসরত জাহরার নামে ইউএপিএ ও ভারতীয় দণ্ডবিধি ৫০৫ ধারার আইনে মামলাও রুজু হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে দেশবিরোধী বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্ট করা হয়েছিল। যদিও মাসরত এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, যাই ঘটে যাক তিনি তাঁর কর্তব্যে অবিচল থাকবেন।
এছাড়াও গত সপ্তাহে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরের জন্য শ্রীনগরের সাংবাদিক পীরজাদা আশিককে পুলিশ হেনস্থা করে। একই রকম ঘটনা ঘটে অপর এক সাংবাদিক মুস্তাক আহমেদের সঙ্গেও। এমনকি কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এই করোনা কাণ্ডের সময়েও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হেনস্থার কোনও বিরাম নেই।
এদিকে সদ্যপ্রকাশিত ‘রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস’-এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ভারতে সাংবাদিকদের ওপর রাজনৈতিক চাপ, পুলিশি অত্যাচার দিনের পর দিন বাড়ছে, যা স্বাধীন ভাবে কাজ করার পক্ষে যথেষ্ট অসুবিধার। এই অসুবিধা ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বেড়েছে বলেও জানিয়েছে ওই রিপোর্ট। রিপোর্টে উল্লেখ, ভারতের সমসাময়িক হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিরও যথেষ্ট প্রভাব পড়ছে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের তরফ থেকে ওঠা অভিযোগও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। জানা গেছে, ২০১৯ পরবর্তী সময়ে ভারতের বুকে দাঁড়িয়ে বিদেশি সাংবাদিকদের কাজ করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সমস্যা হচ্ছে, এমনকি বেশ কিছু অঞ্চলে তাদের প্রবেশাধিকার পর্যন্ত নেই। প্রসঙ্গত সমসাময়িক ভারতে সাংবাদিক হত্যারও নজির মেলে।
Support Free & Independent Journalism