দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : বিশ্বে মহামারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপে ছড়িয়ে পড়েছে ধর্ষণ। এ অপকর্মটি বিশ্বব্যাপী একটি গর্হিত অপরাধ। আর এই অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইন পাস করেছে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার কাদুনা রাজ্য। এখন থেকে সেখানে ধর্ষণের দায়ে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তি হিসেবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে নপুংসক করে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় , কেউ যদি শিশু ও ১৪ বছরের কম বয়সী কাউকে ধর্ষণ করে তাহলে তাঁর শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।
নাইজেরিয়া জুড়ে উদ্বেগজনক হারে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় কঠোর শাস্তির এই আইনকে দেশটির অনেক নাগরিক স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও সমালোচকেরা বলছেন, জনগণ স্বাগত জানালেও এ আইন নাইজেরিয়ার সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এছাড়া এই আইনের ফলে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার সংখ্যাও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গুলোর মধ্যে একমাত্র কাদুনা অঙ্গরাজ্যেই ধর্ষণের অপরাধে এতটা কঠিন শাস্তির আইন চালু হল। যদিও ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে অপরাধী স্বেচ্ছায় নিজেকে নপুংসক করার অস্ত্রোপচার করাতে পারেন।
আমেরিকার অনেক অঙ্গরাজ্যে ওষুধের মাধ্যমে নপুংসক করার বিধান রয়েছে, তবে এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে নপুংসক করা হয় না। ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৬ সালে ওষুধের মাধ্যমে নপুংসক করার অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ধর্ষক ও শিশু নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে একই শাস্তির বিধান চালু করার পক্ষে মত দিয়েছেন। যদিও ইমরান মনে করেন, ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা তার।
নাইজেরিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মহিলা ও শিশুকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়। গত ডিসেম্বরে দেশটির নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। গত জুনের সর্ব শেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা ভাইরাস মহামারির ক্ষেত্রে ওই সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে গেছে। কারণ হিসেবে, মহামারি ঠেকাতে লকডাউনে ঘরবন্দী নারী ও শিশুরা অধিক হারে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। সারাবিশ্বেই লকডাউনের মধ্যে নারী-শিশুদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন বেড়ে গিয়েছে।