দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিশেষজ্ঞরা সাবধান করেছিলেন। কিন্তু তখনও কানে তোলেনি কেন্দ্র। সেই ফলই এখন ভুগতে হচ্ছে। গ্রামেও এখন থাবা বসিয়েছে করোনা। গ্রাস করছে একের পর এক পরিবার। অনেক পরিবারেই দেখা গিয়েছে কেউই আর বেঁচে নেই। অর্ধেকের বেশি গ্রাম ধুঁকছে জ্বরে। তার পর শ্বাসকষ্ট হয়ে তারাও মারা যাচ্ছেন। এমনটাই বলছে রিপোর্ট।
সেই রিপোর্ট এও বলছে, যে সরকারি পরিসংখ্যান যা বলছে, বাস্তবে তার থেকে অনেক বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্ধেক লোকের সংক্রমণ ধরাই পড়ছে না। ধরা পড়ার আগেই মারা যাচ্ছেন। তার পর চিকিৎসকরা মৃত্যুর কারণ হিসেবে লিখে দিচ্ছেন অন্য কিছু। ধামাচাপা দিচ্ছেন কোভিডের কথা।
দিল্লি থেকে মাত্র ১.৫ ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে বাসি। উত্তরপ্রদেশের এই গ্রামে গত কয়েক দিন ধরে ৫,৪০০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মোট জনসংখ্যার এক–তৃতীয়াংশ। গত তিন সপ্তাহে মারা গিয়েছে ৩০ জন। গ্রামে কোনও চিকিৎসক নেই, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, অক্সিজেন নেই। কৃষক সংগঠনের নেতা সঞ্জীব কুমার জানালেন, বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে অক্সিজেনের অভাবে। যাঁদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তাঁদের জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁদের সমস্যা বাড়ছে, তাঁদের চার ঘণ্টা দূরে হাসপাতালে ভর্তি করানোর চেষ্টা চলছে। অনেকের পথেই মৃত্যু হয়েছে।
শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, গোটা দেশের গ্রামেই এই ছবি। একের পর এক গ্রাম উজাড় হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের সকলেই মারা যাচ্ছেন। তার পর তাঁদের দেহ হয়তো ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীতে। বহু গ্রামে ক্ষেত খালি পড়ে রয়েছে। কারণ কাজ করার লোক মিলছে না। সকলেই অসুস্থ।
আর এসবের জন্য মোদি সরকারকেই দায়ী করছেন গ্রামবাসীরা। বাসির ৭২ বছরের সাহাব সিং জানালেন, ‘মোদি আর যোগীকে ভোট দিয়েছিলাম। এবার ভোট দিয়ে ওঁদের তাড়াব।’ উত্তরপ্রদেশে সম্প্রতি হয়ে গেল পঞ্চায়েত ভোট। সেখানে ভোটকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হয়ে বহু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
৫৯ বছরের কুমারসিং নারায়ণ তাঁদের একজন। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হাসপাতালের পথেই মৃত্যু। তাঁর ছেলে প্রবীণ কুমার জানালেন, চিকিৎসক কোভিড হয়েছে কিনা দেখার প্রয়োজনই মনে করেননি। লিখে দিয়েছেন হৃদরোগে মৃত্যু। কুমারসিংয়ের ছেলেও একইভাবে মারা গিয়েছেন। অন্য ছেলে পবন বললেন, এদেশে যখন মানুষ মরছে, তখন ভোট করানো অপরাধ।’
বিজেপি নেতা বৈজয়ন্ত পাণ্ডা যদিও দায় ঝেড়ে বললেন, ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের। মোদি সরকারের নয়। আর রাজ্যে অক্সিজেন উৎপাদনকারী কারখানা বসানোর দায়িত্ব সেখানকার সরকারের।